আগস্ট থেকে আর গ্যাসের বাড়তি বিল দিতে হবে না

দ্বিতীয় ধাপে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। ফলে আগস্ট মাস থেকে আর বাড়তি গ্যাসের বিল দিতে হবে না। তবে গত জুন থেকে যে বাড়তি বিল দেয়া হয়েছে তা ফেরতও পাবেন না গ্রাহকরা।
এ বিষয়ে দেওয়া রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালত বলেছেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত ১ জুন থেকে গৃহস্থালীর সংযোগে এক চুলার মাসিক বিল ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার ক্ষেত্রে ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫০ টাকা করার যে সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে, তা অবৈধ।
রায়ে বলা হয়, ১ আগস্ট থেকে কর্তৃপক্ষ আর ওই বাড়তি হারে বিল আদায় করতে পারবে না। তার আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি সবাইকে জানাতে হবে।  তবে গত জুন থেকে বাড়তি হারে যে বিল গ্রাহকরা দিয়ে আসছেন, তা তারা ফেরত পাবেন না বলে রিটকারীপক্ষের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) পক্ষে এ মামলায় শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল হক টুটুল। বিইআরসি গত ২৩ ফেব্র“য়ারি গৃহস্থালি ও গাড়ির জ্বালানি হিসেবে ব্যবহƒত গ্যাসের দাম বাড়িয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেয়। সেখানে বলা হয়, আবাসিক গ্রাহকদের ১ মার্চ থেকে এক চুলার জন্য মাসে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা দিতে হবে। আর দ্বিতীয় ধাপে ১ জুন থেকে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা হবে।
পাশাপাশি যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহƒত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম ১ মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৩৮ টাকা এবং ১ জুন থেকে ৪০ টাকা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতেও গ্যাসের দাম দুই ধাপে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয় ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের ৩৪ ধারা বলা হয়েছে, জ্বালানি মূল্যের পরিবর্তনসহ অন্য কোনো পরিবর্তন না ঘটলে কমিশন নির্ধারিত ট্যারিফ কোনো অর্থবছরে একবারের বেশি পরিবর্তন করা যাবে না। বিইআরসির গণবিজ্ঞপ্তিতে ওই আইনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে অভিযোগ করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) একটি রিট আবেদন করলে গত ২৮ ফেব্র“য়ারি দ্বিতীয় ধাপের দাম বৃদ্ধির কার্যকারিতা হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দেন।
সেই সঙ্গে ‘আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে’ দেওয়া ওই গণবিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আপিল বিভাগে গেলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। আপিল বিভাগের ওই আদেশের ফলে জুন থেকেই গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি হারে গ্যাস বিল আদায় শুরু করে সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষ।