আজ পহেলা আষাঢ়

কখনো মেঘ, কখনো বিরামহীন ঝরো ঝরো ধারা। আবার কখনো ঝড়ের রুদ্র রূপ। প্রকৃতির এই নানা রং-রূপ-মাদকতা নিয়েই বর্ষা। আজ পহেলা আষাঢ় দিয়ে শুরু হচ্ছে এই ঋতু।
তু বৈচিত্র্যের বাংলাদেশে বর্ষাকালের মেয়াদ আষাঢ়-শ্রাবণ। তবে জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ থেকেই শুরু হয় বৃষ্টির মুখরতা, চলে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত।
এরই মধ্যে রাজধানী ঢাকায় গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে গাঢ় সবুজের সমারোহে সেজেছে প্রকৃতি। ফুরিয়ে আসা কৃষ্ণচূড়ার লালের মধ্য দিয়ে উঁকি দিতে শুরু করেছে হলুদাভ কদমের আভা। বৃষ্টি এলেই তাই নাগরিক মনে সাড়া পড়ে যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে বর্ষার গান-ছবি, মন গেয়ে ওঠে— ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে, গগনে গগনে ডাকে দেয়া/ কবে নবঘন-বরিষনে গোপনে গোপনে এলি কেয়া।’
দেশের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বর্ষাকে নিয়ে রয়েছে নানা মিথ। প্রতিবছর রাখাইন সম্প্রদায় বর্ষাকে বরণ করে ভিন্ন মাত্রায়। তবে সোমবার রাত আর মঙ্গলবারের পাহাড় ধসের ঘটনায় এবার পার্বত্য জেলাগুলোর মতো স্তব্ধ সারাদেশ।
আবার এসেছে আষাঢ়
বর্ষা আর বাঙালির মন-আচরণের প্রকাশ যেন মিলেমিশে একাকার। পরিবেশবিদরা বলেন, বর্ষা ঋতু অনন্য এর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কারণে। কবিকূলও বর্ষার বন্দনায় উচ্চকিত। তাদের কাছে বর্ষা ঋতু কাব্যময়, প্রেমময়। বর্ষার চলন, বাধা না মানা ছন্দ, এর রূপ মানুষকে আনমনা করে তোলে; একা করে ভাবতে সহায়তা করে তার উৎসকে। রোজকার শত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ভিড়েও কোথায় যেন শান্তির বাণী নিয়ে বাঙালির মধ্যে আবাহন এই ঋতুর। নাগরিক মধ্যবিত্ত মন তাই গুনগুনিয়ে গেয়ে ওঠে— ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছি দান।’