এলএনজি পরীক্ষামূলক সরবরাহ শুরু

বঙ্গপোসাগরে ভাসমান তরল প্রাকৃতিক গ্যাস রূপান্তর জাহাজ

তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পরীক্ষামূলক সরবরাহ শুরু হয়েছে। রোববার পাইপে এলএনজি দেয়া হয়েছে বলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নিশ্চিত করেছেন ।
আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সরবরাহ শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।

আরপিজিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, সাগরের পানির ৬৬ ফুট মাটির নিচে দিয়ে পাইপ বসানো হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় এক্সিলারেটের ডুবরি দল ঠিকভাবে কাজ করতে পারছিল না। তাই ত্রুটি সারাতে সময় লেগেছে।

পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, সাগরে ভাসমান টার্মিনালের অবস্থান থেকে সাড়ে চার কিলোমিটারের ছোট পাইপ দিয়ে এনে জাতীয় সঞ্চালন পাইপে দেয়া হবে। মূল সমস্যা এই ছোট পাইপের এক জায়গার জোড়ায়। পাইপে এক হাজার পাইন্ড চাপে গ্যাস সরবরাহ করলে সমস্যা হয়নি। কিন্তু যখনই দেড় হাজার পাউন্ড চাপে গ্যাস সরবরাহ করা হয় তখনই গ্যাস বাইরে বের হতো।

এলএনজি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, রোববার থেকেই পরীক্ষামূলক গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। গ্যাস আনোয়ারা পর্যন্ত পৌঁছেছে। এখন ধাপে ধাপে চাপ বাড়িয়ে পাইপ ও সংশ্লিষ্ট উপকেন্দ্রর সক্ষমতা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে এক্সিলারেটের সূচি অনুসারে ১৬ই আগস্ট  আনুষ্ঠানিক সরবরাহ শুরু হবে।

মহেশখালীর জিটিসিলের স্টেশন থেকে ৯১ কিলোমিটার পাইপ দিয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় জাতীয় গ্রিডে এই গ্যাস যোগ হবে। টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৫০ কোটি  ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। ১৫ বছরের চুক্তির আওতায় এলএনজি পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরিত করে এই গ্যাস সরবরাহ করবে এক্সিলারেট এনার্জি। এলএনজি আমদানির দায়িত্ব পেট্রোবাংলার। প্রাথমিক অবস্থায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস নেয়া হবে। অক্টোবরের পর নতুন আরেকটা পাইপলাইন বসলে ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে।

বর্তমানে প্রতিদিন ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে পেট্রোবাংলা। কিন্তু চাহিদা ৪১০ কোটি ঘনফুট। দৈনিক ১৪০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সংকট রয়েছে। গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও শিল্পে নতুন গ্যাসের জন্য চাপের বিপরীতে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন অপ্রতুল। বিদ্যমান প্রমাণিত মজুদও শেষ হওয়ার পথে। এ অবস্থায় এলএনজি আমদানি করছে সরকার। পেট্রোবাংলা ছাড়াও বেসরকারি উদ্যোক্তারাও এলএনজি আমদানি করতে যাচ্ছে। আগামী বছর সামিট গ্রুপের এলএনজি পাইপলাইনে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া আরেক বড় শিল্পগ্রুপ বেক্সিমকোও এলএনজি আমদানির জন্য চুক্তি করেছে।
এলএনজি প্রকল্পের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে পেট্রোবাংলার কোম্পানি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিজিসিএল)। কোম্পানি সূত্র জানায়, গত ২৪ শে এপ্রিল এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টার্মিনাল (এফএসআরইউ) কাতার থেকে এলএনজি নিয়ে বাংলাদেশে আসে। এরপর ১০ই মে প্রথম দফায় এলএনজি সরবরাহের দিন ঠিক করা হয়। এভাবে একাধিক দিন ঠিক করেও সমুদ্র তলদেশের পাইপের ত্রুটি মেরামত করা সম্ভব হয়ননি বলে সরবরাহ করা যায়নি।