কমছে না জ্বালানি তেলের দাম

শেষ পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম কমছে না। অর্থমন্ত্রী আশা দেখালেও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পরিকল্পনা সরকারের নেই। রোববার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ তেলের দাম না কমানোর পক্ষে সরকারের অবস্থান জানান।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমতে কমতে ২০১৬ সালে তা ৩৩ ডলারে নেমে আসার পর বিভিন্ন মহলের দাবিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪ শতাংশ এবং অকটেন ও পেট্রলের দাম ১০ শতাংশের মতো কমানো হয়েছিল। ফার্নেস অয়েলের দাম প্রতি লিটার ৬০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। জ্বালানি তেলের দাম আরো কমানোর দাবি থাকলেও সরকার আর তাতে সাড়া দেয়নি।
গত বছরের শেষ দিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে আনার উদ্যোগের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার ফাঁকে মুহিত বলেছিলেন, দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে।
গতকাল সংসদে রুস্তম আলী ফরাজী তেলের দাম কমানোর পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী নসরুল বলেন, এখন আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দাম কমানো সম্ভবপর হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গত এক বছর ধরে ঊর্ধ্বমুখী, বর্তমানে তা অব্যাহত আছে। ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে আগামী অর্থবছর থেকে বিপিসি পুনরায় লোকসানের সম্মুখীন হতে পারে। তেলের দর কমালে ভর্তুকি বেড়ে গিয়ে তা আবার জনগণের ওপর চাপ ফেলবে বলেও যুক্তি দেখান জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রি করায় ২৭ হাজার ৪১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার সরকারি ঋণের দায় এখনো বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ওপর রয়ে গেছে। দ্বিতীয় দফায় জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলে বিপিসি পুনরায় লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এবং ঋণ করে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে। তেলের মূল্য কমানো হলে তার সুফল সাধারণ জনগণ সরাসরি উপভোগ করতে পারে না বলেন তিনি।