কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ নিয়ে উল্টো পথে হাঁটছে বাংলাদেশ

‘চীন ও ভারত একে একে তাদের কয়লাখনিগুলো ও কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দিচ্ছে। আর বাংলাদেশ নতুন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে।’
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা আয়োজিত এক সেমিনারে উপস্থাপন করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ‘বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের রূপান্তর, একটি বিকল্প, স্বল্পব্যয়ী টেকসই বিদ্যুৎ’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক সংস্থা আইপিএফের জ্বালানি আর্থিক গবেষণা পরিচালক টিম বাকলি ও গবেষক সায়মন নিকোলাস।
তারা বলেন, বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনটিপিসি ২০২১ সালের মধ্য ভারতের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে যাচ্ছে। চীনেও সৌরবিদ্যুতের প্রযুক্তি দ্রুত আরো উন্নত ও সস্তা হচ্ছে। বিশ্বের বড় বড় আর্থিক ও বীমা কোম্পানি কয়লা খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে না। তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের এখন উজ্জ্বল সম্ভাবনা।
সেমিনারে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তির ডাস্টবিনে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ। ভারত ও চীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করে দিচ্ছে, কয়লাখনিগুলো বাতিল করছে। কারণ, এগুলো মারাত্মক পরিবেশদূষণকারী এবং ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। আর বাংলাদেশ তাদের ফেলে দেয়া এসব প্রযুক্তি নিচ্ছে। বিশ্ব যখন নতুন প্রযুক্তির দিকে আগাচ্ছে, তখন আমরা পেছনের দিকে যাচ্ছি। তিনি বলেন, সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প করে সুন্দরবনকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে।
বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, কয়লা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং পুরোনো প্রযুক্তি। এর মধ্যে মারাত্মক তেজস্ক্রিয় পদার্থ রয়েছে। সরকার বলছে, রামপালের কয়লার ছাই বর্জ্য দিয়ে সিমেন্টে কাঁচামাল সরবরাহ করা হবে, রাস্তা বানানো হবে। তার মানে সরকার এই দূষণ সব জায়গায় ছড়িয়ে দেবে।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।