‘কয়লা উধাও’ ঘটনা তদন্ত প্রতিবেদনে সাবেক কোন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নাম নেই

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি

‘কয়লা উধাও’ ঘটনা তদন্ত প্রতিবেদনে সাবেক কোন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নাম নেই। নিদির্ষ্টভাবে কোন কর্মকর্তাকে দোষী করা হয়নি। শুধু পরিস্থিতি উপস্থাপন করা হয়েছে। একই সাথে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সুপারিশ করেছে কমিটি। তবে কয়লা না থাকার বিষয় নিশ্চিত হয়েছে তারা।
বড়পুকুরিয়া খনির ‘কয়লা উধাও’ ঘটনা তদন্তে পেট্রোবাংলা থেকে কমিটি করা হয়। পেট্রোবাংলার পরিচালন (অপারেশন এন্ড মাইন) কামরুজ্জামানকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। বুধবার কমিটি তাদের প্রতিবেদন মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়।
তদন্ত কমিটির একজন সদস্য বৃহষ্পতিবার এনার্জি বাংলাকে বলেন, প্রতিবেদনে কোন ব্যক্তির নাম নেই। এই অল্প সময়ে এভাবে নিদিষ্ট করে কারও নাম বলা সম্ভব নয়। এটা দীর্ঘ দিনের সমস্যা। নিদির্ষ্টভাবে কোন ব্যক্তি জড়িত থাকলে তা উদঘাটনে আরও পর্যবেক্ষণ দরকার।
প্রতিবেদনে সাবেক কোন কর্মকর্তার নাম না থাকলেও বর্তমান কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও দায়িত্বে অবহেলার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, কাগজের হিসাবে কয়লা মজুদ থাকার কথা। কিন্তু সে কয়লা বাস্তবে নেই। এটা প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে। কয়লার পুরো হিসাব স্বচ্ছভাবে রাখা হয়নি। শুধু কয়লা তোলা বিক্রি আর মজুদের হিসাব রাখা হয়েছে। কিন্তু পদ্ধতিগত লোকসানের কোন হিসাব রাখা হয়নি।
কীভাবে বার্ষিক আয়-ব্যয় বা উদ্বৃত্তপত্র তৈরি করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটাই এই খনি পরিচালনার সমস্যা। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য হিসাব পদ্ধতি নতুনভাবে করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে কয়লা উধাও হওয়ার ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির চারজন সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নাম এসেছে। শুধু চারজন কেন? অন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা নয় কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাবেক কোন কর্মকর্তার নাম প্রতিবেদনে নেই।
পদ্ধতিগত লোকসান আন্তর্জাতিকভাবে যে পরিমাপে করা হয় তা ধরে এখন থেকে হিসাব করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বুধবার বলেছেন, প্র্রথম থেকে এ পর্যন্ত কেউ কয়লার হিসাব রাখেনি। ফলে এই দায়িত্বে যারাই ছিলেন তারা সকলে জড়িত। তারাও দায়ী। সকল দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার ফল।
ঘটনা আরও তদন্তের জন্য জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আর একটা কমিটি করা হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাকেও রাখা হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন।
বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা তুলে মজুদাগারে রাখা হয়। কয়লা তোলা এবং বিক্রির হিসাব রাখা হয়েছে। কিন্তু সিস্টেম লস বিষয়ে কিছু হিসাব রাখা হয়নি।
বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা দিয়ে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে। বর্তমানে খনির গুহা পরিবর্তন করায় কয়লা উত্তোলন বন্ধ আছে। অতীতেও এমন হয়েছে। কিন্তু তখন বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য আগে থেকেই কয়লা মজুদ করে রাখা হতো। এবার আর তা হয়নি। আর তাতেই হিসাবে থাকলেও বাস্তবে কয়লা না থাকার বিষয় জানা গেছে।