গ্যাসখাতে দুর্নীতি: আদালতে ক্ষোভ

অর্ধেক দুর্নীতি কমালে আর গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না বলে মন্তব্য করেছে উচ্চআদালত।

আদালত বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের যে মূল্য সেটা মেনেই গ্যাসের দাম বাড়ানো বা কমানো উচিত। কারণ, ভারত যেখানে ছয় ডলার দিয়ে গ্যাস কিনছে, সেখানে বাংলাদেশ কেন ১০ ডলার দিয়ে কিনবে?

কনজু্যমারস এসাসিয়েসন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)
এর রিট আবেদনের শুনানিতে রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

এই মামলায় দুদক এবং এনবিআরকে পক্ষভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে আদালত জানিয়েছে।

বিচারক বলেন, দুদক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আইনে তাদের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার।অথচ তারা পেট্রোবাংলা ও তিতাসের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের কাছে তদন্ত করার অনুমােতি চেয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই মামলায় পক্ষভুক্ত করতে বলে গ্যাস আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
গ্যাসের দাম বাড়াতে বিইআরসির শুনানি চলার মধ্যে তা স্থগিত চেয়ে গত ২৭ শে ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করে ক্যাব।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার, রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিইআরসির পক্ষে ছিলেন কামাল হোসেন মিয়াজী।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, বিইআরসি যেন শুনানি করতে না পারে, সেটা স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছিলাম। এর মধ্যে ১১ ও ১৪ মার্চ (বিইআরসিতে) শুনানি হয়ে গেছে। বিইআরসি আইনের ৩৪(৬) ধারা অনুযায়ী গণশুনানির পর ৯০ দিনের মধ্যে বিইআরসিকে একটা সিদ্ধান্ত দিতে হয়। বিইআরসি যেহেতু সিদ্ধান্ত দেয়নি, ফলে আদালতের এতে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ আছে।

আদালতে করা আবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের আইনে গ্যাসের বিতরণ ও সঞ্চালন সংক্রান্ত প্রবিধানমালায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কতগুলো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণের কথা বলা আছে। কিন্তু এসব প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়াতে চাইছে পট্রোবাংলা ও বিইআরসি। এখানে দাম বৃদ্ধির নামে যেটা হচ্ছে সেটা হলো কোনো এক বিশেষ মহলকে সুবিধা দেয়ার জন্য এ ধরনের গণশুনানির আয়োজন।

গৃহস্থালি পর্যায়ে দুই বার্নার চুলার জন্য ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ এক হাজার ৪৪০ টাকা এবং এক বার্নার চুলার দাম ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ এক হাজার ৩৫০ টাকা করার দাবি করা হয়েছে।প্রস্তাবনায় শিল্প ও সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দামও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।