গ্যাস চুরি হচ্ছে, তিতাস জানে, কিন্তু ব্যবস্থা নিচ্ছে না

গ্যাস চুরি হচ্ছে, তিতাস জানে কিন্তু ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ আভিযোগ শিল্পোদ্যোক্তাদের।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শিল্পোদ্যোক্তারা এ অভিযোগ করেন।শনিবার রাজধানীনে ডিসিসিআই মিলোনায়তনে ‘এলএনজি’র দর : শিল্প ও বাণিজ্যে এর প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আবুল কাশেম খান।
গার্মেন্টস শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম গ্যাস চুরি ও গণশুনানি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভুলতা, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ কয়েক স্থানে চোরাই লাইন আছে। একথা তিতাস জানে। এলএনজি এসেও চোরাই লাইনে গেলে উদ্যোক্তাদের উপর চাপ বাড়বে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গণশুনানিতে আমাদের কথা শুনলেও কিছুই মানে না।

এ সময় আবুল কালাম আজাদ গ্যাস চুরির কথা স্বীকার করে বলেন, গ্যাস চুরি হচ্ছে। এই চুরি ঠেকাতে হবে। এ সময় তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরে বলেন, এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে দক্ষ জ্বালানি দর ঠিক করা প্রয়োজন। অবশ্য জ্বালানির দর গত কয়েক বছর বাড়লেও একই সময়ে আন্তর্জাতিক দরও বিবেচনায় নেওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে গত কয়েক বছরে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির চিত্রও তুলে ধরেন তিনি।
স্বল্পমেয়াদে সরকারের রাজস্ব বিবেচনা না করে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। একই সাথে মানসম্মত গ্যাস সরবরাহ করতে হবে ।
ডিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, গ্যাসের দর কয়েক দফা বেড়েছে। ফলে উদ্যোক্তারা চাপের মধ্যে আছেন। এ পরিস্থিতিতে এলএনজি’র দর যদি ঠিকভাবে নির্ধারিত না হয়, তাহলে বিনিয়োগে সক্ষমতার পাশাপাশি শিল্পোৎপাদন ও বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। বর্তমানে এমনিতেই ব্যবসায়ের ব্যয় বেশি। এ পরিস্থিতিতে যদি সরাসরি ব্যয় বাড়ে তাহলে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। জাতীয়ভাবে অর্থনৈতিক অগ্রগতি চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারে কূপ অনুসন্ধান কার্যক্রম আরো বাড়ানো এবং একই সাথে বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানো আবশ্যক বলে মত দেন তিনি।

মূল প্রবন্ধে বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ ফওজুল কবির খান গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। বিইআরসি’র সদস্য রহমান মুরশিদ এলএনজি’র নির্ধারত মূল্য আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপর কি ধরনের প্রভাব ফেলবে তা খতিয়ে দেখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় শিল্পোদ্যোক্তা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।

দেশে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায ৩৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ হয় ২৭০ কোটি ঘনফুট। সংকট মোকাবিলায় সরকার বিদেশ থেকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করছে। তবে এর দর নিয়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছিল। বিদ্যমান গ্যাসের দরের চাইতে এলএনজি’র দর চারগুণ বেশি হবে বলে বলা হয়। যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি আমদানির উপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও এলএনজি’র দাম দ্বিগুণ হবে। সরকার ভরতকি দিয়ে দাম নিয়ন্তরনে রেখেছে।