চট্টগ্রামে এলএনজির সংযোগ নিতে শিল্পোদ্যোক্তাদের ধীরগতি

চট্টগ্রামে শিল্পোদ্যোক্তারা আমদানি করা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) নিয়ে ধীরগতিতে এগুচ্ছেন। বর্তমানে ব্যবহার করা গ্যাসের মূল্য থেকে এলএনজির মূল্য কয়েক গুণ বেশি হবে চিন্তায় এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিচ্ছেন তারা।
শিল্পের ২৬৫টি সংযোগের সরকারি অনুমোদন পাওয়া গেলেও মাত্র ৭১ জন আবেদনকারী চাহিদাপত্রের টাকা জমা দিয়েছেন। চাহিদাপত্রের টাকা শোধে শিল্পোদ্যোক্তারা সময় চেয়েছেন বলে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানীর শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান।
আগামী ২৫ শে এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে স্থাপিত এলএনজি টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন। ১৫ই মে থেকে চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা।
কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানী সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে শিল্পের গ্যাস সংযোগের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি একাধিক শিল্পের নতুন সংযোগ ও লোড বৃদ্ধির আবেদন জমা পড়ছে। কিন্তু সংযোগ গ্রহণে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে শিল্পের ২৬৫টি সংযোগ অনুমোদন পাওয়া গেছে। আরো ৩৫৬টি শিল্পের আবেদন অনুমোদনের জন্য উচ্চপর্যায়ে গঠিত কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আরো নতুন করে প্রায় ১০০ আবেদন জমা পড়েছে। জানতে চাইলে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. আল মামুন বলেন, এলএনজির ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। শিল্পের জন্য প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু চাহিদাপত্রের টাকা পরিশোধে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। অনেক আবেদনকারী সময় নিচ্ছে।

সূত্র জানায়, শিল্পে এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হাজার ঘনমিটারে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা।

কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানীর বর্তমানে গ্যাস বিপণনে মূল্য হারে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ খাতে প্রতি ঘনমিটারে ৩ টাকা  ১৬ পয়সা, ক্যাপটিভ পাওয়ার ৯ টাকা ৬২ পয়সা, সার ২ টাকা ৭১ পয়সা, শিল্প ৭ টাকা ৭৮ টাকা, চা-বাগান ৭ টাকা ৪২ পয়সা, বাণিজ্যিক ১৭ টাকা ৪ পয়সা, সিএনজি ৪০ টাকা।

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, এলএনজির মূল্য বেশি হওয়ায় নতুন বিনিয়োগে বিরূপ প্রভাব পড়বে। নির্ধারিত মূল্য পুনর্বিবেচনার জন্য আমাদের প্রস্তাব রয়েছে। গ্যাসের উত্সস্থল যেখানেই হোক না কেন সমগ্র দেশে সমহারে ট্যারিফ নির্ধারণ করতে হবে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি মাহাবুব চৌধুরী বলেন, এলএনজির মূল্য বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে। তবে  দাবি করেছি দেশের সব জায়গায় শিল্পে ব্যবহার করা গ্যাসের একই মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। মূল্য নিয়ে বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত হলে মেনে নেব না। বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাছিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, উচ্চহারে মূল্যের কারণে গ্যাস নির্ভর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। শিল্পের প্রসার বাধার মুখে পড়বে।