জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার অপেক্ষায় সাড়ে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে চার হাজার ৬৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হওয়ার অপেক্ষায়। এর বেশিরভাগই চলতি বছরের মধ্যে উৎপাদনে আসবে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সাথে এবিষয়ে ক্রয় চুক্তি করেছে।

এসব কেন্দ্রের বেশিরভাগই তরল জ্বালানি-নির্ভর। এজন্য এতে উৎপাদন খরচ  বেশি হবে।

গত বছর জুলাই মাসে বছরভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেখানে ২০১৮ সালে নতুন করে দুই হাজার ২৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা বলা হয়। এর মধ্যে সরকারিভাবে এক হাজার ৪৪৯ এবং বেসরকারিভাবে ৮০৩ মেগাওয়াট।

তবে গত গ্রীষ্মের লোডশেডিং পরিস্থিতি দেখে উৎপাদন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়। বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনা নেয়া হয়। এজন্য  ২০১৭ সালে ২৪টা নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করা হয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালে উৎপাদনে আসবে ১৩টা।

চলতি বছরে যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসার সম্ভাবনা আছে, আসবে তার মধ্যে নয়টা সরকারি। এতে মোট উৎপাদন হবে এক হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে তিনটা কেন্দ্র গ্যাসভিত্তিক, তিনটা দ্বৈত জ্বালানি (ডিজেল অথবা গ্যাস), একটা কয়লা, একটা সৌর এবং একটা ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক।

বাকি ১৫টা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বেসরকারিভাবে। যার ক্ষমতা এক হাজার ৬৫৭ মেগাওয়াট। এরমধ্যে সাতটা তেলচালিত, একটা গ্যাস, চারটা সৌর, তিনটা দ্বৈত জ্বালানির।

বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে ধারাবাহিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সরকারের পরিকল্পনা বলছে, ২০১৮ সালে উৎপাদনে আসার পরিকল্পনায় থাকা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ছয়টা এমাসেই উৎপাদনে আসবে।
বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট গ্যাস বিদ্যুৎকেন্দ্রর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ শতাংশ। পিডিবির অধীনে চীনের কোম্পানি সিএমসি এই কেন্দ্র করছে।
সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে কাজ করছে নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক (গ্যাস অথবা ডিজেল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৮৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে, সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রর কাজ ৯৩ ভাগ শেষ হয়েছে। ইজিসিবির অধীনে এর কাজ করছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি। গ্যাসভিত্তিক এ কেন্দ্রটি স্থাপনে ২০১২ সালের ২৮ মে চুক্তি হয়।

এর বাইরে ভেড়ামারা ৩৬০ মেগাওয়াট কেন্দ্র এরইমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। এটা মারুবিনি করপোরেশন স্থাপন করছে। এটাও দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক।

বেসরকারি কেন্দ্রগুলোর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের কমলাঘাট ৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাব চালু হয়েছে। ফার্নেস  তেলভিত্তিক এ কেন্দ্র স্থাপন করেছে বেনকো এনার্জি। কুশিয়ারা ১৬৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রর ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ। গ্যাসভিত্তিক এ কেন্দ্র স্থাপন করবে কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।

এছাড়া, ভারতের বেসরকারিখাত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার জন্য ভেড়ামারায় উপকেন্দ্র করা হচ্ছে। উপকেন্দ্র শেষ হলে বিদ্যুত আমদানি সম্ভব হবে।