জ্বালানিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ জনবল প্রয়োজন: বুয়েটে সম্মেলন

সরকার, উদ্যোক্তা ও ভোক্তার সমন্বয়ে জ্বালানি সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা জরুরি। বিশ্বজুড়ে জ্বালানিখাত সংকটে। মাটির নিচের জ্বালানি ফুরিয়ে যাচ্ছে। তাই এই সংকট মোকাবিলায় গবেষণার পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ জনবল প্রয়োজন। দক্ষ জনবল, বিশেষজ্ঞ, তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে হবে। সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

আজ শনিবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর কাউন্সিল ভবনে আন্তর্জাতিক পেট্রোলিয়াম প্রকৌশল সম্মেলন ২০১৬ (ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং- আইসিপিই) ২০১৬ এর উদ্বোধানী অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন। আইসিপিই এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ম. তামিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রধান অতিথি ছিলেন বুয়েটের উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন ড. মাগলুব আল নুর বক্তব্য দেন।

আইসিপিই এর টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. এনামুল হোসেইন, টেক্সাসের এ এন্ড এম ইউনিভার্সিটির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. স্যাম মান্নান, পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. এ রশিদ হাসান কনফারেন্সে তিনটি কারিগরি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভারতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছে।

ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের মতো অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জ্বালানিখাত একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। এই খাতের সংকট কাটাতে সম্পদ আহরনের পাশাপাশি এই সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। প্রয়োজন দক্ষ জনবল।

ড. ম. তামিম বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়েছে। সে তুলনায় জ্বালানির চাহিদাও বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ি সরবরাহ না বাড়ার কারণে জ্বালানিখাত এখন জটিল সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। বিশ্বায়নের যুগে অভিজ্ঞতা বিনিময় হলে জ্বালানিখাত আরো শক্তিশালী হবে।

‘২১ শতকের টেকসই জ্বালানি নীতি: নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রবন্ধে ড. স্যাম মান্নান বলেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সীমিত। জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে সে হারে সম্পদ বাড়ছে না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য এখন অনেক উপরে। এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের মাথাপিছু আয় অনেক বেশি। কারণ তারা সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। এই সময় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। স্যাম মান্নান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এই সুযোগ বাংলাদেশের কাজে লাগাতে হবে। সম্পদ ব্যবহারের পাশাপাশি একটি টেকসই নিরাপত্তা নীতিও থাকতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জ্বালানিখাতের ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল, বিশ্বায়ন, অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রযুক্তির পরিবর্তন, নতুন নতুন আবিষ্কারের বিষয়ে নজর দিতে হবে।

‘ওয়েল বোর হিট ট্রান্সফার’ শীর্ষক প্রবন্ধে রশীদ হাসান বলেন, কুপ খনন করার সময় মাটির তাপমাত্রা ও তেল বা গ্যাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সম্পদ আহরণের জন্য খুব জুরুরী। কাজেই সম্পদ আহরনের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অনেক পড়াশুনা হলেও বাস্তবে তা  ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে।