দেশের ৩০টি অঞ্চলে তাপমাত্রা ১০’ এর নিচে

কথায় বলে ‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’। তাই মাঘ মাসের প্রথমদিনই দেশের ৩০টি অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলাসিয়াসের নিচে। তীব্র ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে দেশ। রাজধানী ঢাকায়ও শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। চলতি সপ্তাহে এই তাপমাত্রা অব্যহত থাকবে। মাসের শেষে আরো একটি শৈত্যপ্রবাহের আশংকা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তীব্র এই শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত। এর সঙ্গে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান বলেন, আগামী দুই-একদিনে সারাদেশে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে। উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকাও শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে। তিনি বলেন, আকাশ মেঘমুক্ত, জলীয় বাষ্পও কমেছে, উত্তরের হাওয়ার বেগ বেড়েছে। ফলে মাঘের শীতে এবার বাঘ কাঁপবে। সোম-মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলেও শীতের তীব্রতা থাকবে। মাসের শেষে ফের শৈত্যপ্রবাহে আশংকা আছে।
সাধারণত শৈত্যপ্রবাহ তিন ধরণের হয়ে থাকে। তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি মৃদু, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি মাঝারি এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি, শুক্রবার তা কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি, শনিবার তাপমাত্রা আরো কমে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে।
শনিবার পূর্বাভাসে বলা হয়, টাঙ্গাইল, শ্রীমঙ্গল, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাাম, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বরিশাল বিভাগ এবং ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপলগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সীতাকুন্ড, রাঙ্গাামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, সৈয়দপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
শনিবার দেশের সর্বনিু তাপমাত্রা ছিল রাজারহাট ও তেতুলিয়ায় ৫ ডিগ্রি সেলাসিয়াস। এরপর রাজশাহীতে ৫ দশমিক ১, দিনাজপুর ও ঈশ্বরদীতে ৫ দশমিক ৫, শ্রীমঙ্গলে ৫ দশমিক ৭, চুয়াডাঙ্গায় ৫ দশমিক ৮, টাঙ্গাইলে ৫ দশমিক ৯, গোপালগঞ্জে ৬ দশমিক ২, রংপুরে ৬ দশমিক ৬, সৈয়দপুর ও কুমারখালীতে ৭, মাদারীপুর ও ভোলায় ৭ দশমিক ৫, বরিশালে ৭ দশমিক ৭, বগুড়া, তাড়াশ ও সাতক্ষীরায় ৮, খেপুপাড়ায় ৮ দশমিক ১, ফেনীতে ৮ দশমিক ৫, ময়মনসিংহে ৮ দশমিক ৭, সীতাকুণ্ডে ৮ দশমিক ৮, ফরিদপুরে ৮ দশমিক ৯, কুমিল্লায় ৯, যশোরে ৯ দশমিক ২, নেত্রকোনায় ৯ দশমিক ৪, পটুয়াখালী ও রাঙ্গামাটিতে ৯ দশমিক ৫, খুলনায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলাসিয়াস সর্বনিু তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগে ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা রেকর্ড হয় যশোরে ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কুয়াশার পরিমাণ কম থাকলেও কনকনে হিমেল হাওয়া বইছে রাজধানীসহ গোটা দেশেই। বিশেষ করে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে তীব্র শীত পড়েছে। একেবারেই বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষ।