নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। নিয়োগ পাচ্ছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জি থমাস (টম) ওয়েস্ট। পিডিবি প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ দিতে বিদ্যুৎ বিভাগে সুপারিশ পাঠিয়েছে।
পিডিবি এবং এনভিভিএনের মধ্যে পাওয়ার সেলের চুক্তির পাশাপাশি মূল্য নির্ধারণ চূড়ান্ত করবে। দরকষাকষিতে পরামর্শক হিসেবে তারা পিডিবিকে সহায়তা করবে। এছাড়া তারা ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশের আইন, নীতি এবং গাইডলাইন এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের অবস্থান সম্পর্কে পিডিবিকে পরামর্শ প্রদান করবে।
বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছরের শেষ দিকে নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী জনার্দন শর্মা ঢাকা সফরে আসেন। ওই বৈঠকে নেপাল-বাংলাদেশ জলবিদ্যুত উৎপাদনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়।

ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর নেপালের আপার করনালী বেসিনে ৯০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। সেখান থেকে বাংলাদেশ ৩০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুত আমদানি করবে।

কয়েক বছর আলোচনার পর ভারতীয় এনটিপিসি বিদ্যুত ভেপার নিগাম লিমিটেডের (এনভিভিএন) সঙ্গে গত ১০ই এপ্রিল এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করে। এমওইউ অনুযায়ী পিডিবির সঙ্গে এনভিভিএনের সঙ্গে বিদ্যুত বিক্রয় চুক্তি (পিএসএ) সই হবে। পিএসএর ভিত্তিতে আপার করনালী হাইড্রোপাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে এনভিভিএনের মধ্যে একটি বিদ্যুত ক্রয় চুক্তি করবে।
দেশের বাইরে নেপাল এবং ভুটানে জলবিদ্যুত উৎপাদনে সরকার এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুত বিভাগের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন। জলবিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি হওয়ায় এক্ষেত্রে ঋণ প্রাপ্তিও সহজ। সরকার এক বিলিয়ন ডলার নিজেদের মূলধন হিসেবে বিনিয়োগ করলে অন্তত সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে।

বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, এর বাইরে নেপালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হবে। কেন্দ্রে নেপাল এবং বাংলাদেশ সরকারের মালিকানা থাকবে। বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়ায় কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে একই পদ্ধতি নেপালের ক্ষেত্রেও অনুসরণ করা হবে।

বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ নেপালের জ্বালানিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন, এর মধ্য দিয়ে আমরা নেপালে জলবিদ্যুত খাতে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, সরকার নিজস্ব বিদ্যুত উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও বিদ্যুত আমদানির চেষ্টা করছে। নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুত আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এসব দেশে জলবিদ্যুত উৎপাদনের বিশাল সুযোগ রয়েছে। এজন্য ভারতেও সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ দেশটির ওপর দিয়েই বিদ্যুত আনতে হবে। ভারত এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে রাজি আছে বলে জানান তিনি। নেপালে ৩০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুত উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলেও দেশটি বর্তমানে সামান্য পরিমাণ বিদ্যুত উৎপাদন করছে। এখানেও ভারতের বিভিন্ন কোম্পানি কয়েকটি জলবিদ্যুত প্রকল্প নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রসঙ্গত নেপাল এবং ভুটানে বিনিয়োগ করতে নতুন একটি বিদ্যুত কোম্পানি করতে যাচ্ছে সরকার। নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুত কেন্দ্র করা হবে প্রয়োজনে তৃতীয় কোন অভিজ্ঞ কোম্পানি থাকবে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে। বিদ্যুতের একটি অংশ বাংলাদেশ পাবে। সরকারের দীর্ঘমেয়াদী বিদ্যুত উৎপাদন পরিকল্পনাতেও ছয় হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুত আমদানির লক্ষ্য রয়েছে।