বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত

বিভিন্ন মন্ত্রনালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বকেয়া বিদ্যুত্ বিল আদায়ের চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
একইসাথে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বিদ্যুৎ বিলের জন্য বরাদ্দ থাকা অর্থ অন্যখাতে খরচ না করে সেজন্য নির্দেশনা দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ১১ অক্টোবর সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে ছয়টি বিতরণ সংস্থা-কোম্পানির বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় জানানো হয়, সরকারের ৪০টি বিভাগ-মন্ত্রণালয়ের কাছে গত জুন পর্যন্ত এক হাজার ৩৬৪  কোটি সাত লাখ টাকা পাওনা রয়েছে পিডিবি, আরইবি, ডিপিডিসি, ডেসকোসহ ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণকারী কোম্পানির।

সূত্র জানায়,  অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর বিদ্যুৎ বিল দেয় না। বিল পরিশোধে বারবার চিঠি দেয়া হলেও সাড়া মিলে না। বিপুল বকেয়ার পেছনে বিলখেলাপী প্রতিষ্ঠানগুলোর অনীহার পাশাপাশি আদায়ের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও গাফিলতি রয়েছে।

বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রির জন্য সরকারকে প্রচুর ভর্তুকিও দিতে হয়। বিতরণকারী সংস্থাগুলোর আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ বিল শোধ করা জরুরি। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা উচিত নয়।

বিদ্যুত্ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের জন্যই বিদ্যুত্ খাতে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু তারা ওই অর্থ উন্নয়ন প্রকল্পসহ নানা খাতে ব্যয় করলেও যেজন্য ওই টাকা দেয়া হয় সেই বিদ্যুত্খাতেই খরচ করে না। তাই ওই অর্থ যেন শুধু বিদ্যুত্ বিল পরিশোধেই ব্যয় করা হয় বরাদ্দপত্রে সে নির্দেশনা দিতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করতে হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

বকেয়া বিল আদায়ে ৮টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়। সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ করা অর্থ জরুরিভিত্তিতে ছাড় করতে হবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলোর মাসিক সমন্বয় সভায় বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়টি উপস্থাপন করতে হবে। একইসাথে জেলা পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানির কর্মকর্তাদেরকে জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় পাওনা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের বিষয়টি আলোচনা করতে হবে। বিলখেলাপী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বকেয়া আদায়ে বিতরণকারী সংস্থাগুলোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদেরকে ব্যক্তিগত যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিতে হবে।