বিদ্যুতে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক সৌদি আরব

সৌদি আরবের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক।

সৌদি আরবের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি গ্রুপের নির্বাহী সভাপতি মোসহাবাব আব্দুল্লাহ আলখাতানির নেতৃত্বে ২১ সদস্যের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছেন। এই প্রতিনিধিদল বাংরাদেশে বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে তারা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এর সাথে বৈঠক করে।
সৌদি প্রতিনিধি দল বুধবার দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিআই) আয়োজিত একটি বাণিজ্য-সংক্রান্ত সেমিনারেও অংশ নেবে।

সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে দুই মন্ত্রীই সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন চেম্বার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সৌদি ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হলে তা বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য খুব বেশি কাঠামোবদ্ধ না। কিছুটা ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের রফতানিযোগ্য অনেক পণ্য থাকলেও সেগুলোর খুব বেশি প্রচার হয় না। এখন তৈরি পোশাকের মাধ্যমেই বেশি পরিচিত। আমাদের বিভিন্ন পণ্য রফতানির সক্ষমতা আছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন,  ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে। সৌদি আরব চাইলে যেকোনো একটিতে বিনিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশে যারা বিনিয়োগ করতে চাইলে তাদের সাহায্য করব।
বাংলাদেশ এখনো স্বল্পোন্নত দেশ জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বেশির ভাগ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ থেকে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা পাই। এ দেশে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা অন্য দেশে পণ্য রফতানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাবে। কোনো জটিলতা ছাড়াই প্রায় সবাই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারছে। অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে বলে তিনি সৌদি ব্যবসায়ীদের জানান।

বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের পর দেশে স্থিতিশীল অবস্থায় বিনিয়োগ বেড়েছে। আগে বিদেশী বিনিয়োগ ১২০ কোটি ডলারের মতো ছিল, গত অর্থবছরে তা ২২০ কোটি ডলার হয়েছে। দেশে বিদ্যুতের কিছু সমস্যা থাকলেও তা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। আমদানিনির্ভর এলএনজি পরিস্থিতির উন্নতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা হবে।

বাংলাদেশ আটটি খাতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সৌদি উদ্যোক্তরা। আইটি, ফার্মাসিউটিক্যাল, লেদার, পাট, প্লাস্টিক, ফার্নিচার, হিমায়িত পণ্যে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছি। দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে ১২৭টি দেশে আমাদের ওষুধ রফতানি হচ্ছে। স্বাধীনতার পর শুধু চামড়াজাত পণ্য, পাট ও চা বাংলাদেশ থেকে রফতানি হতো। এখন আমরা বিশ্বের প্রায় সব দেশে সাত শতাধিক পণ্য রফতানি করছি।

গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সৌদি আরবে ১৮ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে আমদানি করেছে ৬০ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের পণ্য।