বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আঞ্চলিক পানি ব্যবহার চুক্তি করার দাবি

জাতিসংঘ পানি প্রবাহ আইনের ভিত্তিতে গঙ্গা ও তিস্তা অববাহিকায় আঞ্চলিক পানি ব্যবহার চুক্তি নিশ্চিত করার  দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলন। একই সঙ্গে ফারাক্কা ও গাজলডোবা বাঁধ ভেঙে দেয়ার কথাও জানায় তারা।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস ২০১৭ পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানায়। বাপা’র সহসভাপতি রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য দেন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন।
আব্দুল মতিন বলেন, গঙ্গা অববাহিকার মাত্র ৮ শতাংশ বাংলাদেশের, বাকিটা ভারতের। এজন্য গঙ্গা চুক্তিতে ভারতকে ৯২ শতাংশ পানি দেয়ার কথা বলা হয়নি। আবার তিস্তা নদীর অববাহিকার ১৬ শতাংশ বাংলাদেশে, অথচ সমগ্র তিস্তা অববাহিকার ৫০ শতাংশ মানুষ বাংলাদেশ অংশে বাস করে। তাই যথাযথ পরিবেশ বিবেচনায়, তিস্তার পানি ব্যবহার প্রশ্নে ন্যুনতম ৩ হাজার ২০০ কিউসেক পানি রেখে বাকিটুকু ৫০ অনুপাত ৫০ ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্যবহƒত হতে হবে।
রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, নদী রক্ষার বিষয়টি মানবাধিকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই এ বিষয়টিকে সামনে রেখেই পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে দুই দেশ মিলে সব আন্ত:সীমান্ত নদী থেকে ফারাক্কাসহ সব অবকাঠামো অপসারণ ও আঞ্চলিক পানি ব্যবহার (পানি বন্টন নয়) চুক্তি সম্পাদন ও তার যৌথ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবেন। এই বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাধানটিকে দুই দেশ যত দ্রুত, তত দ্রুতই নদী সংকট কমবে পরিবেশ-কৃষি-অর্থনীতি রক্ষা পাবে এবং দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কও আরো ভাল হবে।
জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলনের সদস্য শেখ রোকন বলেন, এ আন্দোলনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের সঙ্গে একাÍতা ঘোষণা করতে হবে। কেননা, নদীকে সাগরের দিকে যেতে দিতে হবে। অন্যথায় সাগর নদীর দিকে চলে আসবে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে যে দাবিগুলো করা হয় সেগুলো হচ্ছে- ফারাক্কা ও গাজলডোবা বাঁধ ভেঙে দিতে হবে, ভারত ও বাংলাদেশ মিলে গঙ্গা ও তিস্তা অববাহিকায় পরিবেশবান্ধব পানি ও অববাহিকা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জাতিসংঘ পানি প্রবাহ আইন ১৯৭/২০১৪ অনুসমর্থন ও তার ভিত্তিতে আন্ত:নদী পানি ব্যবহার চুক্তি সই ও বাস্তবায়ন করতে হবে।