বিদ্যুতের লোড নিয়ন্ত্রণে নতুন চিন্তা

বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে লোডের উঠানামা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রাখতে অ্যাভেইল্যাবিলিটি বেইজড ট্যারিফ (এবিটি) নামে নতুন একটি ব্যবস্থা চালুর চিন্তা ভাবনা চলছে।

বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর পূর্বাভাসের ভিত্তিতে উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে জাতীয় গ্রিডকে অতিরিক্ত লোডের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখা এবং বার বার লোড উঠানামা নিয়ন্ত্রণ করাই এই ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে।

বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে এ নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি। এতে বিপিডিবি, ডেসকো, ডিপিডিসি, নোজোপাডিকো, বিআরইবি ও পিজিসিবির কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. মনোয়ারুল ইসলামের পরিচালনায় কর্মশালায় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব আহমেদ কায়কাউসসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পিজিসিবির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জামাল উল্লাহ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

উপস্থাপনায় তিনি বলেন, এই ব্যবস্থায় বাংলাদেশে সকাল ৯টার মধ্যে পরের দিনের জন্য পরিকল্পনা ঠিক করবে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার-এনএলডিসি। প্রথমে উৎপাদন কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর চাহিদা জেনে নিয়ে পরের দিনের পরিকল্পনা ঠিক করা হবে। এভাবে জাতীয় গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি ৪৯ দশমিক ৮ হার্জ থেকে ৫০ দশমিক ২ হার্জের মধ্যে ধরে রাখতে চেষ্টা করবে তারা।

লোড পরিপূর্ণ অবস্থায় কোনো জেনারেশন কোম্পানি যদি বেঁধে দেয়া সীমার চেয়েও বেশি উৎপাদনে যায় তবে তাদের কাছ থেকে আনুপাতিক হারে ঘোষিত মূল্যের চেয়ে কম দামে বিদ্যুত কেনা হবে। আবার কোনো কারণে চাহিদা বেড়ে গেলে সেই ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত বিদ্যুতের জন্য প্রণোদনা মূল্য পাবে কোম্পানিগুলো।

২০০২ সালে ভারতে এই ব্যবস্থা চালু হয় বলে জানান তিনি।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জনগণের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের চাহিদা পূরণই আমাদের লক্ষ্য। এই চাহিদা পূরণের জন্য যে কোনো প্রযুক্তি যুক্ত করা হলে সেটা হবে বিনিয়োগ।

নতুন এই উদ্যোগকে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক আগেই এটা করা গেলে ভালো হত।

উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ার উপযোগী করে এটা বাস্তবায়ন করা উচিত।

পিজিসিবির তথ্যমতে, বর্তমানে জাতীয় গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি ৪৯ দশমিক ৭০ হার্জ থেকে ৫০ দশমিক ৭০ হার্জের মধ্যে অবস্থান করে। ২০২৪ সালে পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হলে গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি ৪৯ দশমিক ৯৫ হার্জ থেকে ৫০ দশমিক ০৫ হার্জের মধ্যে থাকবে।

কার্যকরী মিনিগেশন সিস্টেমবিহীন আর্ক ফার্নেস লোড সিস্টেম ফ্রিকোয়েন্সির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। জাতীয় গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি অব্যাহতভাবে উঠানামা করলে গ্রিড বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে পড়ে।