মহেশখালিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র: জাপানকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা

মহেশখালি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সব প্রকল্পে আগের মতোই বিনিয়োগ করবে জাপান। তবে এজন্য তাদের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ এই নিরাপত্তা দিতে সম্মত হয়েছে। প্রয়োজনে সেনাসদস্য দিয়ে জাপানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সাথে জাইকার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পাশে থাকার কথা জানান।

হলি আর্টিজান রেস্ট্রেরেস্টে হামলায় জাইকা কর্মকর্তা, প্রকৌশলীসহ সাতজন মারা যাওয়ার পর বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ করা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। মহেশখালি বিদ্যুৎ কেন্দ্রর দরপত্র প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেয়া হয়। নতুন করে তাদের অবস্থান পরিস্কার করল জাইকা।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, জাপান বাংলাদেশে বিদ্যুৎখাতে আগের মতোই বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশের বন্ধু হিসাবে থাকবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে আগের মতোই অংশীদার হবে। সন্ত্রাসী কোন হুমকিতে তারা দমে যাবে না। হুমকি প্রতিহত করেই বাংলাদেশে থাকবে। তিনি বলেন, আমরাও তাদের সকল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।

মহেশখালি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানিয়েছে জাইকা প্রতিনিধি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সকল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজনে বিশেষ স্থাপনা বিবেচনায় জাপানিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা যেতে পারে বলে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।

জাইকা প্রতিনিধির সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম ও জ্বালানি সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জাইকা প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেছে বিদ্যুৎ সচিব। বৈঠকে মহেশখালি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

মহেশখালি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দরপত্র জমা দেয়ার নির্ধারিত তারিখ ছিল গত ২৪শে জুলাই। কিন্তু ১লা জুলাই ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার ঘটনার পর দরপত্র জমা দেয়ার তারিখ এক মাসের জন্য পিছিয়ে ২৪শে আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীকালে ওই সময় বাড়িয়ে ২৪শে অক্টোবর করা হয়।

ওই সময় এ প্রকল্প বাস্তবায়নাকারী কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম আগ্রহী কোম্পানিগুলোর অনুরোধে সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানান।

গত বছরের আগস্টে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র করার অনুমোদন দেয় সরকার। একই সাথে কয়লা উঠা নামা করানোর জন্য গভীর সমুদ্রবন্দর করার কথা। এই কাজে প্রয়োজন হবে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা এরমধ্যে ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে। এরমধ্যে চার হাজার ৯২৪ কোটি টাকা সরকারের তহবিল থেকে এবং  সিপিজিসিবিএল দেবে দুই হাজার ১১৯ কোটি টাকা।

মহেশখালির এই কেন্দ্র স্থাপনে জাপানের সুমিতোমো কর্পোরেশন ও মারুবেনি করপোরেশন প্রস্তাব জমা দিয়েছে।

হলি আর্টিজেনের ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদার করতে মাতারবাড়ির ওই প্রকল্পে আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান নিয়োগ করা হয়েছে। এ প্রকল্পে জাইকার ৪৩ জন কর্মী এখন মাতারবাড়িতে কাজ করছেন।

nasrul with jica