রমজানে গ্যাসের ওপর নির্ভর করছে বিদ্যুতের লোডশেডিং

গ্যাস পাওয়ার ওপর নির্ভর করছে রমজানে বিদ্যুতের লোডশেডিং হবে কিনা। চাহিদা অনুযায়ি গ্যাস পেলে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। অবশ্য পেট্রোবাংলা যথাসম্ভব গ্যাস দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
রমজানে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার লক্ষ্য ঠিক করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। এই বিদ্যুতের  ৬২ থেকে ৭০ ভাগ উৎপাদন হয় গ্যাস থেকে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস পাওয়া গেলেই চাহিদা অনুযায়ি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এছাড়া রমজানে তেল চালিত সকল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ তথ্য জানায় বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এ সময় অতিরিক্ত সচিব মাকসুদা খাতুন, আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন, পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, ¯্রডোর চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন, ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহিদ সারওয়ারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ২০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন। কিন্তু বৃহষ্পতিবার সরবরাহ করা হয়েছে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। আর রমজানের সময় অন্তত ১২ কোটি ঘনফুট গ্যাস চায় পিডিবি। এই পরিমান গ্যাস পেলেই সন্তষজনক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে জানিয়েছে পিডিবি। এই মুহুর্তে ১৩ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। একই সাথে বন্ধ আছে চারটি সারকারখানা।
সভায় বিদ্যুৎ সচিব বলেন, রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। এই বাড়তি চাহিদা  মেটাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পাানিগুলো। ইফতার ও সেহেরির সময় চাহিদা বেড়ে যায়, ওই সময় বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় এমন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করতে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। অন্যদিকে রাত ৮টার পর বিপণিবিতান বন্ধ রাখতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন তিনি। সচিব বলেন, রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রন কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটির মাধ্যমে রমজানের বিদ্যুৎ সরবরাহ, সমন্বয় এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। কোন এলাকায় লোডশেডিং করতে হলে তা গ্রাহককে আগে থেকেই জানানোর নির্দেশ দেন তিনি।
রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এগুলো হলো, রাত আটটায় বিপনী বিতান ও দোকান বন্ধ করতে হবে, সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদার সময় অর্থাৎ সন্ধ্যায় রি-রোলিং মিল, ওয়েল্ডিং মেশিন, লন্ড্রীসহ বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী সরঞ্জাম ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে, চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে ও আসন্ন রমজান মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো, সুপার মার্কেট, পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাতি ব্যবহার বন্ধ করা, ইফতার ও তারাবির সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্রের সাশ্রয়ী ব্যবহার করতে হবে, বিদ্যুতের অপচয় রোধ করতে সিএফএল বাল্বের পরিবর্তে এলইডি ব্যবহারে ব্যবস্থা নিতে হবে, এক এক দিন এক এক এলাকার বিপনী বিতান বন্ধ রাখার নিয়ম (হলিডে স্ট্যাগারিং) কার্যক্রম জোরদার করা হবে, প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা, ইফতার, তারাবি নামাজ ও সেহরির সময় লোডশেডিং না করা, বিকেল ৫টা তেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি পাম্প বন্ধ রাখা এবং অবৈধ্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।