রাজধানীতে ‘শিশু ও পরমাণু’ উৎসব

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রোসাটমের অধীন এএসই গ্রুপ অব কোম্পানিজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘শিশু ও পরমাণু’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে পরমাণু শিল্প তথ্য কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল ‘বিদ্যুৎ স্বনির্ভর মোদের দেশ : স্বনির্ভর বাংলাদেশ’ বিষয়ক শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ‘পরমাণু পাঠ্য অ আ ক খ’ পুস্তিকার আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন এবং পরমাণু শক্তি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের সহযোগিতায় এএসই এই উৎসবের আয়োজন করে।
এএসই গ্রুপ অব কোম্পানিজ এর বাংলাদেশ প্রকল্পের দায়িত্বে নিয়োজিত ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাক্সিম ইয়েলচিসেভ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের মেম্বার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকৌশলি মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মাহমুদ হোসেন, এএসই’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি সের্গেই সাদভনিকভ রোসাটমের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ফিলিপ কসোভসহ পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ম্যাক্সিম ইয়েলচিসেভ তার বক্তব্যে বলেন, ‘আজকের শিার্থীদের হাতেই পরমাণু শিল্পের ভবিষ্যৎ। এদের মধ্য থেকে অনেকেই ভবিষ্যতে পরমাণু শক্তি প্রকল্প স্থাপন ও পরিচালনায় অংশ নেবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নতুন প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ স্কুল জীবন থেকেই সৃষ্টি করতে হবে। চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে শিশুরা কল্পনায় তাদের ভবিষ্যত বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরার সুযোগ পাবে। বাংলা ভাষায় পরমাণুবিষয়ক বই পড়ার মাধ্যমে এ ব্যাপারে সহজে জানতে ও বুঝতে সম হবে এবং এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রতি তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। বইগুলো ঢাকা, পাবনা, ইশ্বরদীর বিভিন্ন স্কুলে বিতরণ করা হবে। ঢাকার পারমাণবিক শিল্প তথ্য কেন্দ্রেও এগুলো পাওয়া যাবে।’
রোসাটম প্রতিনিধি ফিলিপ কসোভ বলেন, ‘বাংলা ভাষায় পরমাণু বিষয়ক বইটি পড়ার মাধ্যমে এক দিকে শিশুদের যেমন এই বিষয়টির প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে এবং একই সঙ্গে ভবিষ্যতে পরমাণু বিশেষজ্ঞ হওয়ার অনুপ্রেরণাও লাভ করবে।’
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের মেম্বার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকৌশলি মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘আমরা ২০২১ সাল নাগাদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পেতে শুরু করব বলে আশা করছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা হাই-টেক জগতে প্রবেশ করছি। প্রকল্পটি আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে’।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রায় ৫০ জন শিশু শিল্পী অংশগ্রহণ করে। বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন প্রতিথযশা শিল্পী সমরজিত রায় চৌধুরী, আবুল বারক আলভী এবং শেখ রোকনুজ্জামান।
আলোক চিত্র প্রদর্শনীতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, পারমাণবিক জ্বালানি, পারমাণবিক শক্তির বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কিত ৭০টির বেশি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ইশ্বরদীর রূপপুরে রুশ সহায়তায় স্থাপিত হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কেন্দ্রটিতে প্রতিটি ১,২০০ মেগাওয়াট মতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট থাকবে। বিশ্বের সর্বাধুনিক ও নিরাপদ ভিভিইআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে প্রকল্পটিতে।