সুন্দরবনের আশেপাশে কয়লা পরিবহণ নিষিদ্ধের দাবি

একের পর এক কয়লাসহ বিষাক্ত পণ্যবাহী জাহাজ ডুবছে সুন্দরবনের আশেপাশের নদীগুলোতে। দুষিত হচ্ছে নদীসহ সুন্দরবনের আশেপাশের পরিবেশও। সুন্দরবন রক্ষার অঙ্গীকার ও আইন থাকা সত্ত্বেও সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এবারের ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী জাহাজে কয়লার পরিমাণ ছিলো আগের তুলনায় দ্বিগুণ। অবিলম্বে সুন্দরবনসহ আশেপাশের এলাকায় কয়লাসহ বিষাক্ত পণ্যবাহী পরিবহণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৩ জানুয়ারি সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত পশুর নদীতে আবারো একটি কয়লাবাহী জাহাজ ডুবেছে। এতে কয়লার পরিমাণ ছিলো ১ হাজার টন। এর আগে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে তেল, কয়লাসহ বিষাক্ত পণ্যবাহী ৩টি জাহাজ  পশুর এবং শ্যালা নদীতে ডুবেছিল। এর পরিণতিতে দীর্ঘমেয়াদে সুন্দরবনের বিপর্যয় সম্পর্কে হুশিয়ারি দিয়েছেন দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, এইসব জাহাজ ডুবির পর সরকারের ভূমিকা ছিল ন্যাক্কারজনক। গত কয়েকবারে বিষাক্ত পণ্যবাহী জাহাজ ডোবার পরে স্থানীয় জনগণ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা চেষ্টা করে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করলেও  সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ভূমিকা ছিল খুবই দায়িত্বহীন। দেশের মানুষ সুন্দরবনের উপর একের পর এক এই ধরনের জাহাজ ডুবির ঘটনায় উদ্বিগ্ন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার একদিকে এই নৌপথে বিষাক্ত পণ্যবাহী জাহাজ পরিবহণ বন্ধ করছে না, অন্যদিকে দেশ বিদেশের ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও রামপাল প্রকল্প নিয়ে এখনো অগ্রসর হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য যে, এই প্রকল্পের জন্য কয়লা বহন করতে হলে ৩০ বছর ধরে প্রতিদিন পোড়ানোর জন্য ১২ থেকে ১৩ হাজার টন কয়লা এই একই নদী দিয়ে পরিবহণ করতে হবে। এতে আরো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে সুন্দরবন।
তারা বলেন, অবিলম্বে সুন্দরবনের ভিতরে নৌপথে কয়লা, তেল ও ফ্লাইএ্যাশসহ বিষাক্ত পণ্য পরিবহণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বনগ্রাসী-ভূমিগ্রাসী সব ধরনের বাণিজ্যিক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।