আইওসি’র দাবি মেনেই পিএসসি হচ্ছে সাগরে
আন্তর্জাতিক তেল গ্যাস উত্তোলন কোম্পানি (আইওসি) দাবি মেনে নিয়েই গভীর সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য উৎপাদন অংশীদারী চুক্তি (পিএসসি) করা হচ্ছে।
গ্যাসের দাম বাড়িয়ে এবং ইচ্ছেমত বিক্রির সুযোগ দিয়ে গভীর সাগরে গ্যাস ব্লক ইজারা দেয়া হচ্ছে। এই সুযোগ পাচ্ছে যুক্তরাস্ট্রের কোম্পানি কনোকো ফিলিপস্ ও নরওয়ের স্টেটওয়েল। এছাড়া তারা কোন আয় করও দেবে না। নতুন করে তাদেরকে গভীর সমুদ্রের ১২, ১৬ এবং ২১ নম্বর ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ দেয়া হচ্ছে। এরআগে সাগরের ১০. ১১ ও ৭ নম্বর ব্লকে কাজ পেয়েও কনোকো ফিলিপস তা শেষ করেনি। ১০ ও ১১ নম্বরে শুধু দ্বিমাত্রিক জরিপ করেছিল। কিন্তু আজও তার ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিতে উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি’র (পিএসসি) নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। দ্রুত সময়ে এবিষয়ে চুক্তি করা হবে।
প্রস্তাব অনুযায়ি, সংশ্লিষ্ঠ কোম্পানি গভীর সমুদ্রে গ্যাস পেলে তাদের অংশ ইচ্ছে মত বিক্রি করতে পারবে। এক্ষেত্রে পেট্রোবাংলার অনুমোতি নেয়া প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ পেট্রোবাংলা একক ক্রেতা থাকছে না। দেশের মধ্যে অন্য যে কোন কোম্পানির কাছে বিক্রি করতে পারবে। ঐ কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করলেও আয় কর দেবে না। পেট্রোবাংলা তাদের আয়কর দিয়ে দেবে। খসড়া পিএসসি সংশোধন করে এসব সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া পিএসসি সংশোধন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। পিএসসিতে গ্যাসের দাম ৫ দশমিক ৫ ডলার থাকলেও এখন করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ ডলার। প্রতি হাজার ঘনফুটে এক ডলার দাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া গ্যাস সঞ্চালনেও তারা কোন টাকা দেবে না। গ্যাস উত্তোলন করার পর তা জাতীয় গ্রিডে পৌছাতে গেলে যে পাইপ ব্যবহার করতে হয় সেখানে চার শতাংশ পরিবহন ভাড়া দেয়া লাগে। এই অর্থও তাদের দেয়া লাগবে না।
পিএসসি অনুযায়ি ১২ নম্বর ব্লকে তিন হাজার ৪১২ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ করা হবে। দ্বিমাত্রিক জরিপে ভাল ফল পেলে ত্রিমাত্রিক জরিপ করা হবে। এছাড়া একটি অনুসন্ধান কূপ খননের কথাও জানানো হয়েছে। ১৬ নম্বর ব্লকে দুই হাজার ৭৭৫ বর্গ কিলোমিটার এবং ২১ নম্বর ব্লকে তিন হাজার ৩৭৬ বর্গ কিলোমিটার জরিপ করবে। প্রতিটি ব্লকে একটি অনুসন্ধান কূপখননসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৯ মিলিয়ন ডলার।
এক বছর আগে তিনটি ব্লকের জন্য ডাকা দরপত্রে এককভাবে অংশ নেয় এই কোম্পানি। ওই সময় অগভীর সাগরের ১০ ও ১১ নম্বর এবং গভীর সাগরের ৭ নম্বর বকে কাজ করার বিষয়ে কনোকো দরপ্রস্তাব অনুমোদন করে সরকার। পরে ১০ ও ১১ নম্বরের জন্য পেট্রোবাংলার সঙ্গে পিএসসিও করে। কিন্তু চুক্তি করার কিছুদিন পর কনোকো ওই দুই ব্লকে আর কাজ করবে না বলে জানায়। প্রায় একই সময় তারা গভীর সাগরের ৭ নম্বর ব্লকের জন্য পিএসসি করবে না বলে জানায়।
এ অবস্থায় ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে গভীর সাগরের ১২, ১৬ এবং ২১ নম্বর ব্লকে অনুসন্ধানের জন্য কনোকো ও স্ট্যাটঅয়েল যৌথভাবে দরপ্রস্তাব জমা দেয়।
জ্বালানি বিভাগ জানায়, খুব শিগগির পিএসসি (উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি) করবে। এজন্য পেট্রোবাংলাকে পিএসসির খসড়া তৈরি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।