আশুগঞ্জ ২০২ মেগাওয়াট কেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু

সরকারি বেসরকারি যৌথ বিদ্যুৎ কেন্দ্রর প্রথম যাত্রা শুরু হল। যৌথ বিনিয়োগের ইউনাইটেড আশুগঞ্জ ২০২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। ৯ মে জাতীয় গ্রিড এই বিদ্যুৎ যোগ হয়েছে।
এটি কম্বাইন্ড সাইকেল মডিউলার বা ফ্লেকজি সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। গ্যাস ইঞ্জিন ভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিশ্বে অনেক থাকলেও বাংলাদেশে এই প্রথম। এতে বিশ্বখ্যাত ওয়াটসীলার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্ধারিত সময়ের আগেই বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে।
২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আশুগঞ্জ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এর ২৯ শতাংশ এবং ইউনাইটেড পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ৭১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে গঠিত হয় ইউনাটেড আশুগঞ্জ এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড  (ইউএইএল)। কেন্দ্রটি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রন করবে ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পাওয়ার সার্ভিস লিমিটেড।
দরপত্র আহ্বান শেষে (যোগ-বিয়োগ) ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ইউএইএলকে উদ্যোক্তা নির্বাচন করা হয়। আশুগঞ্জ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১৫ মাসের মধ্যে স্থাপনের জন্য ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করে। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৫ মাস সময় নির্ধারণ করা হয়। ২০১৫ সালের ১৯ মে শুরু হওয়ার কথা  থাকলে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে ৮ মে।
আশুগঞ্জ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাধারণতঃ বেসরকারি উদ্যোক্তারা চুক্তি অনুসারে সময় মতো বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করতে পারেনা। ইউনাইটেড কাজটি নির্ধারিত সময়ের আগেই করতে পেরেছে।
ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে এক শুভ বন্ধন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাইনুদ্দিন হাসান রাশিদ বলেন, বাংলাদেশে এটা এক নতুন যুগের সূচনা করল।
চুক্তি অনুসারে এই কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ১৫ বছর বিদ্যুৎ কিনবে। প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টার জন্য গড়ে দাম চার দশমিক ৬৬৩ ডলার। গ্যাস নির্ভর কেন্দ্রটিতে ওয়াটসীলার তৈরী দশ দশমিক ৭৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২০টি গ্যাস ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে ১৬ দশমিক ১ মেগাওয়াট ক্ষমতার টারবাইন সরবরাহ করেছে ভারতীয় কোম্পানি ট্রিভিনী টারবাইন। ২০ ইউনিট ওয়েস্ট হীট রিকোভারী বয়লার সরবরাহ করেছে ভারতীয় কোম্পানি এম ই এনার্জি। ইপিসি ঠিকাদার হিসাবে কাজ করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান নেপচুন কর্মাশিয়াল লিমিটেড। কেন্দ্রটির জন্য সাব স্টেশন ও সুইস গিয়ার সরবরাহ ও স্থাপন করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান এনার্জিপ্যাক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং।
সম্প্রতি গ্যাস ইঞ্জিন ও ফ্লেকজি সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াটসীলা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিল্লূর রহীম বলেন, সিঙ্গেল ইঞ্জিনের জ্বালানি দক্ষতা ৪৩ থেকে ৪৪ শতাংশ। কিন্তু ফ্লেকজি সাইকেলে জ্বালানি দক্ষতা ৫০ শতাংশের উপরে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বর্তমানে গড় জ্বালানি দক্ষতা ৩২ শতাংশ।