উত্তরার রাস্তায় গ্যাস উবে যাওয়া বন্ধ হয়নি
উত্তরার বিভিন্ন রাস্তায় গ্যাস উবে যাওয়া বন্ধ হয়নি। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু মেরামত করলেও অনেক স্থানে এখনও রাস্তাভেদ করে গ্যাস বের হচ্ছে। যেসব স্থানে পানি আছে কিম্বা ড্রেন সেখানে এই গ্যাস বের হওয়া পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। এতে আগুন ধরে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাসাবীকে।
মঙ্গলবার রাজধানির উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ১২, ১৩ এবং ১৬ নম্বর রাস্তা ঘুরে গ্যাস উবে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। রাস্তার যেসব স্থানে বৃষ্টির পানি জমে আছে সেখানে বুদবুদ বের হচ্ছে। গ্যাসের চাপে সেই বুদবুদ ফুটন্ত পানির মত উঠানামা করছে। আর যেসব জায়গা শুকনা সেখানে শরু ছিদ্র তৈরী হয়েছে। গর্তের মুখে হাত দিয়ে গ্যাস বের হওয়া অনুভব করা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও গ্যাসের হালকা গন্ধও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর রাস্তার ১৪ নম্বর বাড়ির তিন তলার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, এই এলাকায় প্রায় ৫০টি স্থান দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে। তিতাস গ্যাসের পক্ষ থেকে পাইপ মেরামতের পরও গ্যাস বের হওয়া বন্ধ হয়নি। প্রায় চার বছর ধরে এই গ্যাস বের হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এছাড়া অনেকবার লিখিতভাবে এই সমস্যান কথা তিতাস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
উত্তরায় বেশি বুদবুদ বের হচ্ছে ১২ নম্বর সেক্টরের ১৩, ১৪, ১৫ এবং ১৬ নম্বর রাস্তায়। ১৬ নম্বর রাস্তা পাকা না হওয়ায় গ্যাস উদগিরণ সহজে চোখে পড়ছে।
১২ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর রাস্তায় গিয়ে দেখা গেল তিতাসের কারিগরি দল সেখানে মাটি খুড়ে পাইপ মেরামতের কাজ করছে। সেখানে দায়িত্বে থাকা টেকনিশিয়ান মো. আলাউদ্দিন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঈদের পরদিন থেকে এ পর্যন্ত ৩০ জায়গায় পাইপ মেরামত করা হয়েছে। আরও কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০টি জায়গার পাইপ ঠিক করতে হবে। পর্যায়ক্রমে এগুলো মেরামত করা হবে। তিনি জানান, গ্যাসের লাইনের মাত্র ছয় ইঞ্চি উপর দিয়ে ওয়াসার পানির পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এতে গ্যাসের পাইপলাইনের ওপর চাপ পড়েছে। এ কারণে পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. এর পরিচালক (অপারেশন) মসিউর রহমান বলেন, আমাদের জনবল কম আছে। তবুও অভিযোগ পেলেই সাথে সাথে সেখানে মেরামত করা হয়। উত্তরার কয়েকটি জায়গাতে পাইপ ফেটে গ্যাস বের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে মেরামতের কাজ চলছে।
১৬ নম্বর রাস্তার এক বাড়ির কেয়ার টেকার আনোয়ার জানান, গত কয়েকবছর ধরেই তাদের বাড়ির পানির পাইপের মধ্য দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছিল। রাস্তার গ্যাস পানির পাইপের সাথে বাড়ির নিচের পানির ট্যাংকিতে এসে পড়ছে। সম্প্রতি তিতাসের পক্ষ থেকে মেরামত করা হয়েছে। তারপরও গ্যাস বের হওয়া বন্ধ হয়নি। পানির মোটর ছাড়া থাকলেও গ্যাস বের হয় আবার বন্ধ থাকলেও গ্যাস বের হয়। গত ঈদের সময় থেকে এর মাত্রা বেড়ে গেছে। তিনি জানান, ৭ ও ৮ অক্টোবার তিতাসের পক্ষ থেকে রাস্তা খুড়ে মেরামতের কাজ করেছে। কিন্তু মেরামতের পরও গ্যাস উবে যাওয়া বন্ধ হয়নি।
এলাকাবাসী জানান, ২০১০ সাল থেকেই এখানে পাইপ ছিদ্র হয়ে গ্যাস বের হচ্ছে। তিতাসে স্থানীয় অফিসের বার বার অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এ পর্যন্ত ১৯ বার লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে ঈদের পরদিন এই গ্যাসের কারণে আগুন ধরে আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ৪১ নম্বর প্লটের বাসিন্দা আমেনা খাতুন। তার বাম হাতের অনেক জায়গা গেছে। আমেনা খাতুনের স্বামী মোস্তফা জানান, রান্নাঘরে চায়ের কেটলিতে পানি ভরতে গিয়ে পাইপ ফেটে আগুন ধরে যায়।