উপসাগরীয় যুদ্ধের পর সর্বোচ্চ সাপ্তাহিক দরপতনে ডব্লিউটিআই

জ্বালানি তেল বহনকারী ওয়াগন - এনার্জি বাংলা

 

যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাসের (ডব্লিউটিআই) দাম গত শুক্রবার আগের দিনের তুলনায় ১০ দশমিক ৭ শতাংশ কমে গেছে। এতে গত সপ্তাহে জ্বালানি পণ্যটির গড় দামে বড় ধরনের পতন দেখা দিয়েছে, পণ্যটির সাপ্তাহিক দরপতনে যা ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সর্বশেষ সপ্তাহে আগের সপ্তাহের তুলনায় ডব্লিউটিআইয়ের দাম ২৯ শতাংশ কমেছে। জ্বালানি পণ্যটির সাপ্তাহিক দরপতনের এ হার সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকের মধ্যকার উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় দেখা গিয়েছিল। এদিকে গত সপ্তাহে রেকর্ড কমেছে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ক্রুডের দামও। সর্বশেষ সপ্তাহে ব্রেন্টের গড় দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে। এ নিয়ে টানা চার সপ্তাহ পণ্যটির দাম কমতির দিকে রয়েছে।

নভেল করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীতে পরিণত হয়েছে। দেশে দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমে আসছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন দেশ লকডাউনে রয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অর্থনীতিতে শ্লথতা নেমে এসেছে। অন্যান্য পণ্যের মতো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাণিজ্য সংকুচিত হয়ে আসছে। এ পরিস্থিতি জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা কমিয়ে অর্ধেকে নিয়ে আসতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা, যা পণ্যটির দাম হ্রাসে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।

এছাড়া অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করেছে সৌদি আরব ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান মূল্যযুদ্ধ। জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাসসংক্রান্ত সৌদি আরবের নতুন প্রস্তাবে সম্মত হয়নি রাশিয়া। এ কারণে স্বাক্ষরিত হয়নি ওপেকের নতুন চুক্তি। দ্বিমতের ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের প্রধান রফতানি বাজারকে টার্গেট করে পণ্যটির বিশেষ মূল্য ছাড় দেয় সৌদি আরব। দেশটির এ সিদ্ধান্তের পর পরই কমতে শুরু করে পণ্যটির দাম।

সৌদি আরব ও রাশিয়ার মধ্যকার মূল্যযুদ্ধের ধাক্কা লেগেছে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেলের বাজারেও। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিরূপণ ও প্রয়োজনীয় করণীয় নির্ধারণে সৌদি আরবে দূত পাঠানোর কথা জানিয়েছে ওয়াশিংটন।