এক বছরেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যায় না: শুনানীতে অভিযোগ

রাজবাড়ির আব্দুর রশিদ একবছর আগে আবেদন করে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। কি কারণে তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি তাও জানেন না। ওজোপাডিকো এলাকায় ২০১৩ সালের ১০ই নভেম্বর আবেদন করেছিলেন তিনি।
বৃহষ্পতিবার বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথমবারের মত গ্রাহকদের অভিযোগ শোনার শুনানী করেন। সে সময় ঐ ব্যক্তি এক বছরেও সংযোগ পাননি বলে অভিযোগ করেন। প্রতিমন্ত্রী দ্রুত বিষয়টি সমাধানের নির্দেশ দেন। তিনি সময় বেধে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। কয়েকমাস আগে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন ৪৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। তা কার্যকর হয়নি।
এদিকে গতকালের শুনানীতে আরইবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈনউদ্দিন বলেছেন, প্রতি মাসে এক লাখ নতুন বিদ্যুৎ গ্রাহক করা হচ্ছে। আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে।
শুনানী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুহু রুহুল্লাহ, ঢাকা পাওয়া ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) চেয়ার‌ম্যান ও অতিরিক্ত সচিব তাপস কুমার রায়, ডেসকোর চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, গ্রাহকদের সেবার মান বাড়াতে চাই। বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করলে নির্দিষ্ট সময়ে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে সংযোগ দিতে না পারলে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে। যাতে গ্রাহকরা হতাশ না হন। প্রত্যেকটি সংস্থায় গ্রাহক সেবা কেন্দ্র থাকতে হবে। সেখান থেকে গ্রাহকরা যেন ঠিক তথ্য পেতে পারে। তাদেরকে বাস্তব অবস্থা জানাতে হবে। কেন কি কারণে সংযোগ দেয়া যাচ্ছে না এবং কবে নাগাদ সংযোগ দেয়া হবে। তা জানাতে হবে। কোন গ্রাহককে অল্পব্দকারে রাখা যাবে না।
চলতি বছর থেকে বিদ্যুতের দাম কমানোর কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু এখন কেন আবার পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগত ভাবে এখনও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর  পক্ষে না। মূলত বিদুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে না। সমন্বয় করা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম কম। এজন্য সমন্বয় করা হচ্ছে।
এক মাত্র অভিযোগকারী রাজবাড়ি থেকে আসা আ¦ন্ধুর রশিদ জানান, ২০১৩ সালের ১০ নভেল্ফ^র তিনি দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা নিয়ে গঠিত ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেন। সংযোগের আবেদনের সঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যর একটি ডিও লেটারও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক ঘুরোঘুরির পরও বিদ্যুৎ সংযোগটি পাননি। অনুষ্ঠানের উপস্থিত ওয়েস্টজোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদের কাছে বিষয়টি তাৎক্ষনিক জানতে চান বিদ্যুত প্রতিমšúী। ব্যবস্ট’াপনা পরিচালক বিষয়টি দেখে দ্রুত সমাধান করবেন বলে জানান।
বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, এখন যে পরিমান সংযোগের আবেদন জমা পড়েছে তার সবগুলোতে সংযোগ দিতে গেলে দেড় হাজার মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। সত্যিকার অর্থে আমরা ওই পর্যায়ে এখনও পৌছায়নি। তবে দেশে কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র হচ্ছে আশা করছি এর মাধ্যমে উৎপাদন বাড়বে। রামপাল প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু হবে। ২০১৮ সালের মধ্যে রামপাল থেকে বিদ্যুৎ পাব বলে আশা করা যায়। একই সাথে মাতারবাড়ি কেন্দ্র থেকেও ২০১৮ সালের মধ্যে আংশিক উৎপাদনে চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, এতদিন এলোমেলো ভাবে চলেছি। এখন নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে যাচ্ছি।
গণশুনানীতে অংশ নিতে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আবদুর রশিদ ছাড়া আর কেউ শুনানীতে আসেননি।