এবার সমুদ্রে গ্যাস তুলতে যাচ্ছে বাপেক্স

এই প্রথম সমুদ্রে গ্যাস কূপ খনন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের রাস্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স।বঙ্গোপসাগরের মগনামায় ১৬ নম্বর গ্যাস ক্ষেত্রে আপাতত একটা কূপ খনন করবে।

অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি সান্তোসের সাথে যৌথভাবে এই কূপ খনন করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ঐ কোম্পানির সাথে দায়বদ্ধতার চুক্তি করা হয়েছে। আজ সোমবার এই চুক্তির দলিল হস্তান্তর করেছে উভয় প্রতিষ্টান। আগামী মাসে চূড়ান্ত চুক্তি করা হবে। আসছে জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারি মাসে যৌথভাবে কাজ শুরু করবে তারা।
কূপ খনন করতে প্রায় ১১ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ডলার খরচ ধরা হয়েছে।

চুক্তিতে বাপেক্সের সচিব মোহম্মদ আলী ও সান্তোসের প্রেসিডেন্ট এন্ড্রো ডি গ্যারিস সই করেন।

সোমবার বাপেক্সের প্রধান কার্যালয়ে এই চুক্তির দলিল হস্তান্তরের সময় বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতিকুজ্জামানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সান্তোসের আঞ্চলিক পরিচালক মাহমুদুল করিম ও জেনারেল ম্যানেজার এমদাদ চিশতি উপস্থিত ছিলেন।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতিকুজ্জামান এনার্জি বাংলাকে বলেন, এই কূপের ৪৯ ভাগ বাপেক্স এবং ৫১ ভাগ সান্তোসের। এর অতীত, ভবিষ্যৎ, লাভ লোকসান সব কিছুর অংশও এই হিসাবে ভাগ হবে। অর্থাৎ যা খরচ হবে তার ৪৯ ভাগ বাপেক্স দেবে। গ্যাস পাওয়া গেলেও তার ৪৯ ভাগ বাপক্সে পাবে। এটা বাপেক্সের প্রথম সমুদ্র যাত্রা। আশা করি সফলভাবে তা শেষ হবে। এই কাজ শেষ হলে অভিজ্ঞতা হবে। ভবিষ্যতে আরও কাজ করা যাবে। সমুদ্রে কাজ করার জন্য এখনই প্রকৌশলী, ভূতত্ত্ববিদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দল গঠন করা হচ্ছে হচ্ছে। সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বাপেক্সের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এজন্য এই অভিজ্ঞতা পরবর্তীকালে অনেক কাজে লাগবে।

মগনামায় যাবতীয় জরিপ ইতিমধ্যে শেষ করেছে সান্তোস। এতে তাদের খরচ হয়েছে নয় কোটি ২৩ লাখ ডলার। এই খরচের ১৭ শতাংশ অর্থাৎ এক কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার ডলার বাপেক্স কে দিতে হবে। এছাড়া কূপ খননের মোট খরচ ধরা হয়েছে দুই কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর ৪৯ শতাংশ দেবে বাপেক্স।
গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে এই টাকা পাবে বাপেক্স। কূপ খননের পর গ্যাস না পেলে বাপেক্সকে এই টাকা শোধ করতে হবে না। তবে গ্যাস পেলে নিয়ম অনুযায়ি দুই শতাংশ সুদে এই টাকা শোধ করতে হবে।

কুতুবদিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে সমুদ্রের মধ্যে দশ কিলোমিটার দূরে মগনামা গ্যাসক্ষেত্র। চট্টগ্রামের সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রে থেকে এর দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম উপকূল থেকে এর দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার।
১৬ নম্বর ব্লকের এ গ্যাসক্ষেত্রের অনুসন্ধান কাজ প্রথমে দেয়া হয়েছিল কেয়ার্ন এনার্জিকে। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা সান্তোসের কাছে সব সম্পত্তি হস্তান্তর করে। এরপর সান্তোস এই ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজের জন্য বিনিয়োগকারি খুঁজতে শুরু করে। বাপেক্স বিনিয়োগ করার আগ্রহ দেখালে সান্তোসও সম্মতি দেয়। এরইমধ্যে এই গ্যাসক্ষেত্রের দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক জরিপের কাজ হয়েছে। জরিপে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কূপ খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সান্তোস। এর আগে কেয়ার্ন জানিয়েছিল, এই ক্ষেত্রের আলাদা আলাদা দু’টি ভিন্ন স্তরে গ্যাস থাকার সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যে একটি ১০ থেকে ১২ হাজার ফুট এবং অন্যটি ১৫ হাজার ফুট নিচে অবস্থিত।