খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু
অবশেষে খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছেছে। তবে তা শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পকারখানার জন্য। আবাসিক গ্রাহকদের জন্য নয়।
৪ঠা সেপ্টেম্বর প্রথম গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে মহানগরীর খালিশপুরে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (এনডব্লিউপিসিএল) ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাণিজ্যিকভিত্তিতে গ্যাস দেয়া হচ্ছে। পরে গ্যাস দেয়া হবে নিউজপ্রিন্ট মিলের বিদ্যুৎকেন্দ্রে।
প্রথম সরবরাহের দিন লাইনে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে গ্যাসের চাপ ছিল ২৮০ পিএসআই (প্রেসার পার স্কয়ার ইঞ্চি)।
সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন, খুলনার বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতিদিন ৩ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হবে।
বর্তমানে ডিজেল দিয়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ২২ টাকা। গ্যাস ব্যবহার করলে এই খরচ কমে দাঁড়াবে ৮ টাকা ৫০ পয়সা।
প্রথম পর্যায়ে গোয়ালপাড়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস দেয়া হবে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগবে। নিউজপ্রিন্ট মিলের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে তিন বছর। বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হলে তারপর সংযোগ দেয়া হবে। তবে গোয়ালপাড়ায় পিডিবির বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। পিডিবি চাইলে আগামী বছর থেকেই এই লাইন থেকে গ্যাস দেয়া যাবে।
২০০৬ সালের ১৩ই ডিসেম্বর পেট্রোবাংলার অধীনে ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস বিতরণ সেল’ গঠন করা হয়। কাজ শুরু হয় এই অঞ্চলে গ্যাস পৌঁছানোর। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে দুটি প্রকল্পের আওতায় এক দশক কাজ করার পর ২০১৬ সালে খুলনার আড়ংঘাটা পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন লাইন পৌঁছায়। এরপরই বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প কারখানা পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের ৩০ জুন সরকার গ্যাস বিতরণ প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে নগরীর ভেতরের শিল্প কলকারখানায় গ্যাস সংযোগ দেয়ার উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। পদ্মার এপারের ২১ জেলায় গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে ‘সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি’।
২০১৬ সালে মূল প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় গ্যাস বিতরণ প্রক্রিয়া থমকে যায়। পরে বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ শিল্প কলকারখানায় গ্যাস লাইন বসাতে ছোট কিছু প্রকল্প নেয়া হয়। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ না থাকা এবং অর্থ সংকটে তা বাতিল হয়ে যায়। ২০১৭ সালে খালিশপুরের গোয়ালপাড়ায় নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের প্রস্তাব দেয় এনডব্লিউপিসিএল। মূলত তাদের অর্থেই গ্যাস পাইপলাইন বসানোর প্রস্তাব অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আড়ংঘাটা জিটিসিএলের সিটি গেট স্টেশন (সিজিএস) থেকে নিউজপ্রিন্ট মিল ও ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।