ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের জন্য নাইকো দায়ী
ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের জন্য নাইকো দায়ী। আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত ইকসিড নাইকোকে দায়ী করে রায় দিয়েছে। ছাতক গ্যাসক্ষেত্র যত ক্ষতি হয়েছে তার পুরোটা দিতে হবে নাইকোকে। শুধু গ্যাসের ক্ষতি নয়, এর জন্য পরিবেশ এবং মানুষের যে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হয়েছে তারও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ২০০৫ সালে দুই দফায় বিস্ফোরণ হয় টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে। ইকসিড রায়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কাজ না করায় বিস্ফোরণ হয়েছে। গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক মান ঠিক রাখা হয়নি। আর এজন্যই বিস্ফোরণ হয়েছে। তাই নাইকো এই বিস্ফোরণের জন্য দায়ী। এই রায়ের ফলে এখন থেকে ছাতক গ্যাসক্ষেত্র পূর্ণ মালিকানা বাংলাদেশ সরকার পেল।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য আবেদন করা হবে। পরে গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের নতুন করে পরিকল্পনা করা হবে। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। নাইকো এখন আন্তর্জাতিকভাবে দেউলিয়া কোম্পানি। তাই তার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, মামলায় আমরা জিতেছি এটাই বড় পাওয়া। এছাড়া নাইকো যে টাকা বাংলাদেশ সরকারের কাছে পেত গ্যাসের বিল হিসেবে তা আর দেয়া লাগবে না। ৯ নম্বর গ্যাসক্ষেত্রটি আমরা নিয়ে নেব। এটা বড় অর্জন।ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের জন্য নাইকো দায়ী। আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত ইকসিড নাইকোকে দায়ী করে রায় দিয়েছে।
ছাতক গ্যাসক্ষেত্র যত ক্ষতি হয়েছে তার পুরোটা দিতে হবে নাইকোকে। শুধু গ্যাসের ক্ষতি নয়, এর জন্য পরিবেশ এবং মানুষের যে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হয়েছে তারও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২০০৫ সালে দুই দফায় বিস্ফোরণ হয় ছাতকের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে। ইকসিড রায়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কাজ না করায় বিস্ফোরণ হয়েছে। গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক মান ঠিক রাখা হয়নি। আর এজন্যই বিস্ফোরণ হয়েছে। তাই নাইকো এই বিস্ফোরণের জন্য দায়ী।
এই রায়ের ফলে এখন থেকে ছাতক গ্যাসক্ষেত্র পূর্ণ মালিকানা বাংলাদেশ সরকার পেল।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য আবেদন করা হবে। পরে গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের নতুন করে পরিকল্পনা করা হবে। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। তিনি বলেন, বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দুর্নীতি হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণ হলো এটা নিয়ে বড় দুর্নীতি হয়েছে।
নাইকো এখন আন্তর্জাতিকভাবে দেউলিয়া কোম্পানি। তাই তার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, মামলায় আমরা জিতেছি এটাই বড় পাওয়া। এছাড়া নাইকো যে টাকা বাংলাদেশ সরকারের কাছে পেত গ্যাসের বিল হিসেবে তা আর দেয়া লাগবে না। কুমিল্লার ৯ নম্বর গ্যাসক্ষেত্রটি আমরা নিয়ে নেব। এটা বড় অর্জন।
আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তির প্লাটফর্ম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপুটেড (ইকসিড) এর রায়ে স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি নির্ণয় করে বাংলাদেশকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলেছে। সব মিলিয়ে আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
রোববার দুপুরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, দীর্ঘ ১০ বছর আইনি প্রক্রিয়ার পর এই মামলার রায় বাংলাদেশের পক্ষে এসেছে। রায় পক্ষে আসাতে সারা বিশ্বের কাছে বার্তা চলে গেছে যে, বাংলাদেশে গিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা যাবে না।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি ইকসিড এ রায় দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান বলেন, কানাডিয়ান তেল গ্যাস কোম্পানি নাইকো ২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বাংলাদেশের ছাতক গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান উন্নয়নের কাজ পায়। একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রকে প্রান্তিক দেখিয়ে বিএনপি সরকার কানাডিয়ান এই কোম্পানীকে কাজ দেয়। এতে রাষ্ট্রীয় বিপুল ক্ষতির কথা উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। এই মামলাটি দেশের আদালতে চলমান রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, ২০১৬ সালের ২৫ শে মার্চ আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দিয়ে যে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হয় তা ২০১৮ সালে ইকসিডে জমা দেয়া হয়েছে। ইকসিড রায়ে বলেছে নাইকোর গাফিলতি এবং অদক্ষতার জন্যই বিস্ফোরণ ঘটেছে। ফলে এর দায় নাইকোকেই নিতে হবে। বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আগামী সেপ্টেম্বরে আবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটি পেছাবে।
এই মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈন গণি জানান, বাপেক্স এর ১১৮ মিলিয়ন ডলার এবং পেট্রোবাংলার ৮৯৬ মিলিয়ন ডলারসহ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এর বাইরে আদালত বলেছে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি এবং পরিবেশ এবং প্রতিবেশের ক্ষতি নিরুপণ করে আদালতে জমা দিতে। এতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
তিনি আরও জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে আরও একটি শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু এখন করোনার কারণে সেটি সম্ভব হবে না। ফলে আমাদের পরিস্থিতি ভাল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ ঠিক করার জন্য সময় লাগতে পারে। এজন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
জ্বালানি সচিব বলেন, আমাদেরকে এই অর্থ তাদের দিয়ে দিতে হত। এখন আর দিতে হচ্ছে না। আবার এর ফলে সারা বিশ্বের কাছেই একটি সুন্দর বার্তা পৌঁছেছে। এটিও বিবেচনা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গ্যাসকূপ খনন করার সময় ২০০৫ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি ছাতকে প্রথম দফা বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আরও এক দফা বিস্ফোরণ ঘটে একই বছর আগষ্ট মাসে। এতে খনিটিতে থাকা গ্যাসের অনেকটা পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয় প্রাণবৈচিত্র বিলুপ্ত হয়। এখনও ছাতকে এই গ্যাস ক্ষেত্রের আশেপাশের এলাকায় গ্যাস উদগীরণ হচ্ছে।