জলবায়ু পরিবর্তনে সময়ের অসঙ্গতি
বসন্তের মাতাল হাওয়া এখন তীব্র দাবদাহে পরিবেশ উষ্ণ করে তুলেছে। আর অঝোর ধারায় ঝরিয়ে দিচ্ছে বৃষ্টি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সময়ের অসঙ্গতি। সমুদ্র পাড়ের এই বদ্বীপে চৈত্রের শেষে বৃষ্টির প্রাথর্না করতে হত। বৈশাখেই শুরু হত ঝড় বৃষ্টি উতাল পাতাল আবহাওয়া। এখন তা চৈত্রের মাঝামাঝিতেই শুরু।
গত সপ্তাহে তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল জনজীবন। চলতি সপ্তাহে অঝোর ধারায় বৃষ্টি। প্রকৃতির এই বৈরী আচরণের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকেই দায়ি করছে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিল্প কারখানা। শিল্প কারখানা থেকে নির্গত কার্বন অধিকহারে জলবায়ুতে মিশে যাবার কারণে বাড়ছে তাপমাত্রা। ফলে অস্বাভাবিকভাবে দুই মেরুর বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বাড়ছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে। বিশ্বের চরম আবহাওয়ার বিপর্যয় এখন বাংলাদেশেও অনুভূত হচ্ছে। গতবছর গ্রীষ্মে যেমন তীব্র গরম অনুভবের পর শীতেও তীব্র শীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আইনুন নিশাত বলেন, গত কয়েক বছর আমরা আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত বেশ কিছু ঘটনা বাংলাদেশে ঘটতে দেখেছি। গ্রীষ্মে গরম বেশি অনুভূত হওয়া, শীতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কম হওয়া। বর্ষায় বৃষ্টি না হয়ে অসময়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। এসবই জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত কারণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আবহাওয়ার উল্টাপাল্টা আচরণ শুরু হয়েছে। এ অস্বাভাবিক আচরণের বিরূপ প্রভাব দেশের জীববৈচিত্রের ওপর পড়বে। আইনুন নিশাত বলেন, আগে সাইবেরিয়া থেকে যে বাতাসটা আসত তা অনেক ওপর দিয়ে আসত। এখন মাঝে মধ্যে নিচ দিয়ে চলে আসছে। বদলে যাচ্ছে বাতাসের গতিপথ। এটা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই ঘটছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবে শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কী হয় তা এখনই বলা মুশকিল।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় শীর্ষে। অর্থনীতিবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে গেছে। জীবনযাত্রায়ও পরিবর্তন ঘটছে। এসব ক্ষতি মোকাবেলায় সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে ।
আবহাওয়া অধিদফতরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সাগরে লঘুচাপের কারণে বৃষ্টি হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই বৃষ্টি কমে যাবে। এরমধ্যে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে।