জুনেই রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রর দ্বিতীয় ইউনিটের সনদ
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দ্বিতীয় ইউনিটের সনদ পেতে যাচ্ছে এমাসেই। তবে তা নির্ভর করছে সকল তথ্য যাচাইয়ের উপর। এখন তথ্য যাচাই চলছে। সব ঠিক থাকলে জুনেই সনদ দেবে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়রা) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নঈম চৌধুরী এনার্জি বাংলাকে বলেন, লাইসেন্স দিতে প্রয়োজনীয় পর্যালোচনা চলছে। যদি সব ঠিক থাকে তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ জুন মাসের মধ্যেই লাইসেন্স দেয়া হবে। তবে তা নির্ভর করছে তথ্য যাচাইয়ের উপর। সব তথ্য ঠিক থাকলে তবেই লাইসেন্স দেয়া হবে। পরমাণু বর্জ্যর পরিবহন, সংরক্ষণ, নিষ্ক্রিয় করার বিস্তারিত পর্যালোচনা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ড. নঈম চৌধুরী বলেন, পরমাণু গবেষণা চুল্লী এবং পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত বিকিরণের ক্ষতিকর দিক থেকে জনসাধারণ এবং পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সনদ দেয়া হয়। জনসাধারণের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং পরিবেশের সুরক্ষা দেয়া আমাদের দায়িত্ব।সেজন্যই এই পর্যালোচনা।
পরমাণু বিদ্যুতের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে সাইট লাইসেন্স, প্রাথমিক নিরাপত্তা বিশ্লেষণমুলক প্রতিবেদন, কনসট্রাকশন অনুমোদন, চূড়ান্ত নিরাপত্তা বিশ্লেষণমুলক প্রতিবেদন যাচাই করা হবে। এরপর চালনা লাইসেন্স দেয়া হবে। প্রতিবছর এই সনদ নবায়ন করতে হবে।
প্রথম ইউনিটের জন্য পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে ঐ এলাকার মাটি, পানি, বাতাসসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। মাটি, পানি, বাতাস, ভূমিকম্পসহ ৬৩ ধরণের পরীক্ষার ফল পর্যালোচনা করে এই সনদ দেয়া হয়। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে স্থান উপযুক্ত হলে তবেই এই সনদ দেয়া হবে।
দ্বিতীয় ইউনিটের জন্যও এই পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষার তথ্য যাচাই করছে বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের আটজন বিশেষজ্ঞ রাশিয়াতে তথ্য যাচাইয়ের জন্য গিয়েছেন। তাঁরা সেখানে পর্যালোচনা করছেন। তাদের প্রতিবেদনের উপরই নির্ভর করছে কখন লাইসেন্স পাওয়া যাবে।
রূপপুরের প্রথম ইউনিট ও দ্বিতীয় ইউনিট একই স্থানে হচ্ছে। এজন্য সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠরা।প্রথম ইউনিট করার সময় জমি উন্নয়ন ও পানি ব্যবস্থাপনার বাধ করার শর্ত দেয়া হয়েছিল। সে শর্ত পরে পূরণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞান মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইতি রানি পোদ্দার এনার্জি বাংলাকে বলেন, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সনদ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। সনদের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সনদ পেলে দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শুরু করা হবে।
পরমাণু শক্তি কমিশনের পরমাণু শক্তি ও জ্বালানি বিভাগের মূখ্য প্রকৌশলী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রয়োজনীয় সকল তথ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। তারা তা পর্যালোচনা করছে।
বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র ইউনিট-২ স্থাপনের সনদ পেতে আবেদন করেছে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে সনদ দিতে তথ্য যাচাইয়ের কাজ করছে পরমানু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়রা)।
পরমাণু বাণিজ্যিক চুল্লী বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার হয়। এ চুল্লী করতে সনদ নিতে হয়। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এই সনদ দেয়।
পরমাণু বাণিজ্যিক চুল্লীর জন্য বছরে নবায়ন ফি ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া সাইটিং এর জন্য ৩ কোটি, স্থাপনের জন্য ২ কোটি এবং চালনার জন্য ২ কোটি টাকা ফি দিতে হবে।