জ্বালানি তেলের দাম কমানোর প্রজ্ঞাপন কিছুক্ষণ পর – প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম কমানোর প্রজ্ঞাপন কিছুক্ষণ পর প্রকাশ করা হবে। সোমবার থেকে এই দাম কার্যকর হবে।
আজ রোববার কিছুক্ষণ আগে বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে প্রতিমন্ত্রী সচিবালয়ে একথা জানান। ডিজেল, কোরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমবে বলে তিনি জানান।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে সর্বশেষ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয় ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ১২০ থেকে ১২৫ মার্কিন ডলারে ওঠা নামা করছিল। তখন দেশে দাম বাড়িয়ে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬, ডিজেল ও কেরোসিন ৬৮ এবং ফার্নেস অয়েল ৬০ টাকা করা হয়। এখন পর্যন্ত এই দামেই জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে। তবে এখন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে ২৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব বাজারের অব্যাহত পতনের মধ্যে দেশে জ্বালানি তেলের দাম সমš^য়ের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বিগত ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অব্যাহতভাবে কমতে শুরু করে। প্রায় দুই বছর ধরেই জ্বালানি তেলে লাভ করেছে বিপিসি। বিপিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জ্বালানি তেল বিক্রিতে তারা লাভ করেছে ১০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। আর জ্বালানি তেলের বর্তমান দাম বজায় থাকলে বিপিসি চলতি অর্থবছরে লাভ করবে ১২ হাজার কোটি টাকা।
এখন ৬৮ টাকা প্রতি লিটার ডিজেল এবং কেরসিন বিক্রি করে বিপিসি সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স দেয়ার পরও ২৬ থেকে ২৭ টাকা লাভ করছে। প্রতি লিটার ফার্নেস অয়েল ৬০ টাকায় বিক্রি করে একই পরিমাণ লাভ হচ্ছে। অন্যদিকে পেট্রোল ৯৬ টাকা আর অকটেন ৯৯ টাকায় বিক্রি করে লাভ করছে ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা।
গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিপিসি ৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) তেলের দাম না কমানো হলে বিপিসি ১০ হাজার কোটি টাকা লাভ করবে। ইতোমধ্যে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মুনাফা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
এর আগে গত ৩১ মার্চ ফার্নেস তেলের দাম লিটার প্রতি ১৮ টাকা কমিয়ে ৪২ টাকা করা হয়। সে সময় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অন্য জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে বলে জানান।
গত ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় জ্বালানি তেলের দাম কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৭ এপ্রিল তেলের দাম কমানোর প্রস্তাব জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। অকটেন ও পেট্রলে লিটার প্রতি ২১ টাকা এবং ডিজেলে ছয় টাকা করে দাম কমানোর একটি প্রস্তাব জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প¶ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে, ৪৫ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ শতাংশ এবং গৃহস্থালি ও অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ।