ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের সক্ষমতা বাড়ানো হবে
ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় গ্রিডের সক্ষমতা বাড়ানোসহ ৮ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৮৬৮ কোটি ৩ লাখ টাকা।
ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৩০১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এছাড়া সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৫৩৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সরকারের পরিকল্পনা হলো ২০২১ সাল নাগাদ প্রতি বাড়িতে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেয়া । সেই লক্ষ্যে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারণসহ এর অবকাঠামোখাতের উন্নয়নের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরকার গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে জাইকার অর্থায়নে মাতারবাড়ীতে কয়লাভিত্তিক ১২০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ বাস্তবায়নাধীন। এই কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ঢাকা পর্যন্ত সরবরাহের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মেইন পাওয়ার গ্রিড স্ট্রেনদেনিং’ প্রকল্প নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম এলাকায় ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রামে নিরবিচ্ছন বিদ্যুৎ সঞ্চালন নিশ্চিতকরণ সম্ভব হবে।
৪ হাজার ৫৬৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মেইন পাওয়ার গ্রিড স্ট্রেনদেনিং’ প্রকল্পটি জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ মেয়াদে বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে এক হাজার ৩৪০ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪৫৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা অর্থায়ন করা হবে। বাকী ২ হাজার ৭৬৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকার কাছ থেকে পাওয়া যাবে।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো-মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ারড পাওয়ার (২) পিজিসিবি অংশ, মাতারবাড়ি-মদুনাঘাট ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯০ কোটি ৮১ লাখ টাকা। ঠাকুরগাঁও চিনিকলের পুরাতন যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন এবং সুগার বিট থেকে চিনি উৎপাদনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংযোজন প্রকল্প,এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১১ কোটি ১০ লাখ টাকা। শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন’ কম্পোনেন্ট-২: দেশের ৭টি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডায়াগনেস্টিক ইমেজিং ব্যবস্থার আধুনিকরণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
এছাড়া রয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। তারাইল-পাঁচুরিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ (২য় পর্যায়) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২২ কোটি ১ লাখ টাকা। পদ্মা নদীর ভাঙন হতে রাজশাহী মহানগরীরর অন্তর্ভুক্ত সোনাইকান্দি-বুলনপুর পর্যন্ত এলাকা রক্ষা প্রকল্প,এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ঢাকা ওয়াসার সায়েদাবাদ ফেজ-৩ প্রকল্পের ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় ঢাকা মহনগরীর লো ইনকাম কমিউনিটি (এলআইসি) এলাকার ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক পানি সরবরাহ সেবার মান উন্নয়ন এবং ঢাকা ওয়াসার ফাইনান্সিয়াল মডেলিং ও কারিগরি সক্ষমতা উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ কোটি টাকা।
একনেক বৈঠকে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।