দুই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহবান: রামপাল বিদ্যুৎ বাতিল করুন
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের ঘোষাণা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বুধবার মুক্তি ভবনে ‘ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর, বিশ্ব পরিবেশ দিবস এবং সুন্দরবনধ্বংসী প্রকল্প’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, প্রকৌশলী মওদুদুর রহমান, গবেষক মাহা মির্জা। রাজনীতিক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশীদ ফিরোজ, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সাইফুল হক, এডভোকেট আব্দুস সালাম, মোশাররফ হোসেন নান্নু, জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, নাসির উদ্দিন নসু, শহীদুল ইসলাম সবুজ, শামসুল আলম, মহিন উদ্দিন চৌধুরী লিটন, মিজানুর রহমান, আব্দুস সাত্তার, বহ্নি শিখা জামালী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ভুল তথ্য আর হুমকি ধামকি দিয়ে আন্দোলন দমনের যত চেষ্টাই করা হোক না কেন দেশের জনগণ কোনভাবেই সুন্দরবন ধ্বংসী কোন প্রকল্প মেনে নেবে না।
লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সুন্দরবনের পাশে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দেশের ভেতরে জনমত, দেশি-বিদেশী বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ, ব্যক্তি ও সংগঠনের আপত্তি সত্ত্বেও ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে না সরকার। সম্প্রতি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এরমধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তুতি মূলক কাজও চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ভারতের ‘ইআইএ গাইডলাইন ২০১০’ অনুসারে বনাঞ্চলের ২৫ কিমি-র মধ্যে কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না। ভারতে পরিবেশ আইন অনুসারে এনটিপিসির একাধিক প্রকল্প বাতিল করতে হয়েছে।
আগামী ১৪ জুন মাগুড়ছড়া দিবস পালন। ঐ দিন মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস সম্পদ ধ্বংসের জন্য শেভরণ ও নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং সুন্দরবন রক্ষাসহ জাতীয় কমিটির ৭ দফা দাবিতে দেশব্যাপী সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরন তুলে ধরে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ভাবেও রামপাল প্রকল্প ও সুন্দরবন ধ্বংসের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রর্যায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে এই প্রকল্পে আর্থিক বিনিয়োগ থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনের বহু বিকল্প আছে কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নাই। তাই এই সুন্দরবন রক্ষায় শুধু বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশ-ভারতের জনগণের যৌথ প্রতিরোধসহ সারা বিশ্বের সচেতন মানুষ এই প্রতিরোধ আন্দোলনে শরীক হবে।