নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রস্তাব রিলায়েন্সের
গ্যাসভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব দিয়েছে ভারতের অন্যতম বড় শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স। ১৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় রিলায়েন্স প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে। প্রস্তাব অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে মোট ৩ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র করবে কোম্পানিটি। এর মধ্যে প্রথমটি হবে ৭৫০ মেগাওয়াটের।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৭৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম কেন্দ্রটির জন্য রিলায়েন্স সরকারের কাছে দীর্ঘ মেয়াদে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা চায়। পাশাপাশি মহেশখালীতে একটি স্বতন্ত্র ভাসমান টার্মিনাল (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট বা এফএসআরইউ) স্থাপন করে এলএনজি আমদানি করে তা দিয়ে ২ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, রিলায়েন্সের কাছে লিখিত প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। সেটিই তারা দিল। প্রস্তাবটি এখন পর্যালোচনা করে দেখা হবে। তবে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে তাদের প্রস্তাবিত দাম বেশি মনে হচ্ছে। তারা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রস্তাব করেছে প্রায় সাত টাকা। তা ছাড়া, দীর্ঘ মেয়াদে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়াও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময়, গত বছর ৬ জুন রিলায়েন্স ও আদানির সঙ্গে সরকার (বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি) আলাদা দুটি এমওইউ সই করে। সেই সূত্র ধরে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোম্পানি দুটির একাধিক বৈঠক হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় রিলায়েন্সের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব এসেছে। আদানির সঙ্গেও গত বছর আগস্ট মাসে আরও একটি (এটি দ্বিতীয়) সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, আদানি গ্রুপের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় এমওইউ অনুযায়ী ভারতে স্থাপিত তাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তারা বাংলাদেশের কাছে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রি করবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলেন, গত বছর ৬ জুনের এমওইউর বিষয়বস্তু ছিল আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে মোট ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করবে। আর রিলায়েন্স গ্রুপ মহেশখালীতে এফএসআরইউ স্থাপন করে আমদানি করা এলএনজি দিয়ে ২ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট এবং মেঘনাঘাটে বাংলাদেশের সরবরাহ করা গ্যাস দিয়ে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। দুটি কোম্পানিই উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করবে।