নীল এলইডি উদ্ভাবনে জাপানি বিজ্ঞানীদের নোবেল

পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সাশ্রয়ী উজ্জ্বল আলো তৈরি করতে পারে_ এমন নীল আলোর এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োড) উদ্ভাবন করে এ বছরের নোবেল পুরস্কার নিজেদের হাতে তুলে নিলেন তিন জাপানি পদার্থবিদ। তারা হলেন জাপানের ইসামু আকাসাকি ও হিরোশি আমানো এবং আমেরিকার শুজি নাকামুরা। পদার্থবিজ্ঞানের বর্তমান আঙিনায় ব্লু এলইডি একটি নতুন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর। মঙ্গলবার রয়্যাল সুইস একাডেমি এ তিন নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করেন।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর পার ডেলসিং তিন জাপানি বিজ্ঞানীর সাফল্য সম্পর্কে জানিয়েছেন, ইদানীং বড় বড় কোম্পানি এই ব্লু এলইডি আবিষ্কারের জন্য লাগাতার গবেষণা চালিয়েছে। কিন্তু সফল না হয়ে তারা মাঝপথে হাল ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু এ তিন বিজ্ঞানী হাল ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত পেয়েছেন দুর্দান্ত সফলতা। আর একুশ শতকের পৃথিবীকে আলোকিত করবে এলইডি বাতি।
১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে তারা প্রথম নীল এলইডি তৈরি করতে সফল হন। এর সঙ্গে সবুজ ও লাল এলইডি যুক্ত করে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও দীর্ঘস্থায়ী নতুন ধরনের এলইডি সাদা আলোর বাতি তৈরি করা সম্ভব হয়। বিজ্ঞানীরা ধারাবাহিক উন্নয়নের মাধ্যমে এলইডি বাতিকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যাতে একটি এলইডি বাতি ১৬টি সাধারণ বাতি অথবা ৭০টি ফ্লুরোসেন্ট বাতির সমান আলো দেয়। একটি সাধারণ বাতি যেখানে গড়ে ১ হাজার ঘণ্টা আলো দেয়, সেখানে এলইডি বাতি এক লাখ ঘণ্টা আলো দিতে পারে।
রুশ বিজ্ঞানী ওলেগ লোসেভ প্রথম এলইডি আবিষ্কার করেন। ১৯২৭ সালে। তবে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে তার ফলিত প্রয়োগ শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে। বর্তমানে ইলেকট্রনিক্সের জগতে রিমোট কন্ট্রোলের উন্নতি সাধনের সঙ্গে এই এলইডির অগ্রগতির বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।
৮৫ বছর বয়সী আকাসাকি মেইজো বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ৫৪ বছর বয়সী আমানো নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আছেন। আর ৬০ বছর বয়সী নাকামুরা আছেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে।
জাপানে এ সুখবর দিতে সুইডিশ একাডেমির প্রতিনিধি যখন প্রফেসর নাকামুরার দ্বারে কড়া নাড়েন, তখন তিনি ঘুমে। তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে যখন বলা হলো যে, তিনি এবারের নোবেল জয় করেছেন। তখন তার মনে হলো, ‘এ অবিশ্বাস্য।’
রীতি অনুযায়ী, আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল পুরস্কারের সম্মাননা ও অর্থ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। পুরস্কারের অর্থমান ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার।
সূত্র বিবিসি, গার্ডিয়ান