নেপালে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ৫৪
আবারও ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো হিমালয়কন্যা নেপাল। একই সঙ্গে কম্পন অনুভব করেছে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনও। এ ঘটনায় এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত মোট ৫৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে অগণিত মানুষ। নেপালে আহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল চীন-নেপাল সীমান্তে। এ ভূমিকম্পের পেছনে আবারও দায়ী হলো ইউরেশিয়া ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের আন্তঃ চ্যূতি।
দুপুর একটা ৫ মিনিটে প্রথমবার বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৪। এরপর দুপুর ১টা ৩৬ মিনিটে আবারো ভূমিকম্প অনুভব করে দেশবাসী। এ সময় মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৩।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এর তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৮২ কিলোমিটার পূর্বে। এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। এরপরেরটির কেন্দ্র ছিল নেপালের রামছাপ থেকে ৩৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে। প্রথম ভূমিকম্পের দেড় ঘণ্টার মধ্যে নেপালের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা কম্পন (আফটার শক) অনুভূত হতে থাকে, যার মধ্যে পাঁচটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ এর বেশি।
মঙ্গলবার দুপুরে বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলা ভূমিকম্পের সময় রাজধানীর বহু ভবন দুলে ওঠে। আতংকে লোকজন বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ থেকে রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় নদী এবং পুকুরের পানিতে বড় বড় ঢেউ জাগে। গাছপালা থেকে পাখিরা আকাশে উড়তে শুরু করে। এ সময় আতংকিত হয়ে তেঁতুলিয়ায় একজন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া বিভিন্ন ভবনে ফাটলের খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, দূরত্বের কারণে বাংলাদেশে রিখটার স্কেলে ৪ থেকে ৫ তীব্রতার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
আগের ভূমিকম্পের তিন সপ্তাহ পরই আবার ভূমিকম্প আঘাত হানলো নেপালে। ভূমিকম্পের পর পরই আতঙ্কে হাজার হাজার মানুষ রাজধানী কাঠমান্ডুতে বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে। ভূমিকম্পটি কমপক্ষে দুই মিনিট স্থায়ী ছিল বলে জানা যায়। এ ঘটনায় ৩৬ জন নিহত হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া আহত হয়েছে এক হাজার ১০০ জন। এ সময় ভূমিধসের ঘটনা ঘটে নেপালে। বেশ কয়েকটি ভবনও ধসে পড়ে। এ ঘটনার পরপরই নেপালের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ‘ত্রিভূবন’ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
দিল্লী, পশ্চিমবঙ্গ, বিহারসহ ভারতে বেশি কিছু জায়গায়ও ভূকম্পন অনুভূত হয়। সেখানে এক মিনিটের বেশি সময় ধরে হওয়া কম্পনে আতঙ্কিত লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে চলে আসে। এ পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চীনে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল নেপালে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সে সময় কমপক্ষে ৮ হাজার মানুষ নিহত এবং ১৭ হাজার মানুষ আহত হয়েছিল। জাতিসংঘ জানায়, ওই ভূমিকম্পে নেপালে প্রায় তিন লাখ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়।