নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে সমঝোতা হচ্ছে

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি এবং যৌথ বিনিয়োগে নেপালে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা হতে যাচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডুতে এ বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি হতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নেপালের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল আজ নেপাল যাচ্ছেন। এ ছাড়া
সেখানে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটানের আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতা বিষয়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানি মন্ত্রিদের বৈঠক হবে।
চার দেশের বৈঠকে আন্তঃদেশীয় ট্রান্সমিশন লাইন করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। ভারত সম্মত থাকায় এ বিষয়ে আর কোনো বাধা নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ নেপালে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করতে চায়। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
গত আগস্টে নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলে দুই দেশ জ্বালানি বিনিময়ে একমত হয়। সে সময় নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে বাংলাদেশকে করিডোর দেবে বলে ভারত জানিয়েছিল।
নেপালের নদীগুলোয় বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের বিষয় বিবেচনাধীন। তবে কৃত্রিম জলাধার তৈরির বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি দেশটি। সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আনা হবে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে গেলে ভারতের ওপর দিয়ে আনতে হবে। এতদিন ভারত বাংলাদেশকে এই বিদ্যুতের লাইন আনতে অনুমতি দেয়নি। সেজন্য বাংলাদেশ-নেপালের আলোচনাও এগোয়নি। ভারত এখন বাংলাদেশকে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে তার জমি ব্যবহারের অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছে। প্রথমে ভারত ও নেপালের মধ্যে বিদ্যুৎ বাণিজ্য চুক্তি হবে। তারপর বাংলাদেশ-নেপাল সমঝোতা হবে।
নসরুল হামিদ জানান, নেপাল তাদের অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চায়। এই উদ্যোগ ১৫ বছর পরে বাস্তবায়ন হবে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে ভারতের পূর্ণ সমর্থন আছে। নেপালে ৮৩ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে। সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নেপাল সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরে সম্মতি দিয়েছে।
গত বছর আগস্ট মাসে বাংলাদেশ সফরকালে নেপালের জ্বালানিমন্ত্রী রাধা কুমারী গয়ালী বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিতে নেপালের কোনো আপত্তি নেই। নেপালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপক সুযোগ আছে। এই বিদ্যুৎ দিয়ে আঞ্চলিক চাহিদা মেটানো সম্ভব। নেপালের নিজস্ব স্বার্থেই এই বাণিজ্য জরুরি। ভারতের কোম্পানি জিএমআর নেপালে এক হাজার ১২০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে। সেখান থেকেও বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে আপত্তি নেই নেপালের।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, সার্ক অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই চাহিদা মেটাতে নেপালের জলবিদ্যুৎ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে।