পরমাণু চিকিৎসা সেবা হচ্ছে নতুন আট হাসপাতালে: অল্প খরচে উন্নত সেবা

নতুন আট হাসপাতালে চালু হচ্ছে পরমানু চিকিৎসা সেবা। এতে মফস্বল শহরেও ক্যান্সার, থাইরয়েড, কিডনি, লিভার ও বোন রোগ নির্ণয়ের আধুনিক সেবা পৌছে যাবে।
ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস (ইনমাস) তাদের এই সেবা কার্যক্রম  বাড়াচ্ছে। সম্প্রতি এজন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ৫৮২ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব মেডিকেল কলেজে এই সেবা কার্যক্রম চালু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে এই সেবা চালু হবে।
নতুৃন যে আট মেডিকেল কলেজে পরমাণু চিকিৎসা সেবা চালু হবে তা হলো,  রাজধানীর আগারগাঁওয়ের শের-এ-বাংলা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মহাখালীর জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজ এবং পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, কক্সবাজার ও সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
এরপর নোয়াখালী, রাঙামাটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর এবং পটুয়াখালী হাসপাতালে ইনমাস স্থাপন করা হবে।
নতুন আটটি চালু হলে পরমাণু চিকিৎসা  দেয়া হাসপাতালের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৩টিতে। বর্তমানে ১৪টি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসা সেবা চালু আছে্।
পর্যায়ক্রমে দেশের সব বড় হাসপাতাল এবং ৬৪ জেলা সদর হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসা সেবা চালু করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সব মানুষ যাতে এই সেবা সহজে পেতে পারে সেজন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্থানীয় জনগণ পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার করে  জটিল ও কঠিন রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে।
পরিকল্পনা কমিশন বলেছে, প্রকল্পটির মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে স্বল্পমূল্যে আধুনিক পরমাণু চিকিৎসা সেবা দেয়া যাবে । পরমাণু চিকিৎসা বিষয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার ক্ষেত্র প্রসারিত হবে। যা পরে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস (নিনমাস) এর পরিচালক অধ্যাপক ড. নুরুন নাহার জানান, সেবা কার্যক্রম প্রত্যান্ত অঞ্চলে পৌছে দিতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে রোগিদের আর কষ্ট করে ঢাকা বা অন্য জায়গাতে যেতে হবে না। পরমাণুর মাধ্যমে সুক্ষ্মভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
নতুন ইনমাসগুলোতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এগুলোতে থাকবে স্পেক্ট-সিটি, স্পেক্ট, বিএমডি, রেডিও ইমিওনাসি আপটেক সিস্টেম, কালার ডপলার মেশিন। স্বয়ংক্রিয় গ্যামা কাউন্টার, থাইরয়েড ক্যামেরা, থাইরয়েড আটেক সিস্টেম।
ইনমাস ও নিনমাসে সিটি স্ক্যানার, থাইরয়েড স্ক্যানার, আল্ট্রাসনোগ্রাম, কালার ডপলার এবং রেডিও ইমিউনোএ্যাসের জন্য একসেট কম্পিউটারাইজড গামা ওয়েল কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধাসহ রয়েছে ইন-ভিট্রো ল্যাব সুবিধা থাকবে।
পরমাণু যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রোগীদের অস্থি, কিডনি, থাইরয়েড গ্রন্থি, মস্তিষ্ক, যকৃত এবং অন্যান্য স্ট্যাটিক ও ডায়নামিক সিন্টিগ্রাফি সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া হয়। গামা ক্যামেরার মাধ্যমে এসব পরীক্ষার মধ্যে কিডনির কার্যক্ষমতার বিভাজন পরিমাপ সহজ এবং খুবই তথ্যসমৃদ্ধ পরীক্ষা করা হয়। নতুন আটটি হাসপাতালেও এসব সুবিধা গড়ে তোলা হবে।
বরাদ্দ করা অর্থে আটটি ইনমাসের জন্য প্রয়োজনীয় স্থানীয় ও বিদেশী যন্ত্রপাতি ক্রয়, আটটি ইনমাসের প্রতিটির জন্য ৬ তলা ভবনসহ অন্যান্য পূর্ত নির্মাণ ও বৈদ্যুতিক কাজ, ফার্নিচার সংগ্রহ, বিভিন্ন পর্যায়ে ২৬ জন নিয়োগ, একটি জীপ, একটি মাইক্রোবাস, আটটি ইনমাসের জন্য আট এ্যাম্বুলেন্স এবং প্রশিক্ষণ, সেমিনার, কনফারেন্স আয়োজন করা হবে।