নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আবেদন আর গণশুনানির সুপারিশ পর্যালোচনা শেষ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এমাসেই নতুন দাম ঘোষণা করা হবে।
পর্যালোচনা অনুযায়ি আপাতত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ দাম বাড়তে পারে বলে বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে।
বিদ্যুতে ভর্তুকির উপর নির্ভর করে এই দাম ঠিক করার কথা ছিল। চলতি অর্থ বছর ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি থাকছে বিদ্যুতে। ভর্তুকির সাথে সমন্বয় করে এই দাম বাড়ানো হচ্ছে।
পাইকারি দাম বাড়লেও ভোক্তা পর্যায়ে এর কোন প্রভাব পড়বে না। শুধু বিতরণ কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়বে।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে কয়েকটা এখন লাভ করছে। তাই তারা ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর আবেদন করেনি। পাইকারি দাম বাড়ানোর পরে বিতরণ কোম্পানিগুলো যদি দাম বাড়ানোর আবেদন করে তবে আবার গণশুনানির মাধ্যমে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিইআরসি।
বিইআরসির সদস্য (বিদ্যুৎ) মোহাম্মদ বজলুর রহমান বলেন, চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদেশ ঘোষণা করা হবে।
কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর বদলে ২০ শতাংশ কমানো হয়েছে। এখন দাম বাড়ালে ভোক্তাকে অধিকারবঞ্চিত করে জোর করে টাকা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ইউনিট প্রতি ৫ টাকা ১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ টাকা ৫৮পয়সা করার প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবের উপর শুনানি হয়েছে।
বিদ্যুতের একক পাইকারি বিক্রেতা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) বিদ্যুৎ বিতরণ করে। পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়লে শুধু এই কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়বে। এসব কোম্পানির খরচ বাড়লে তারা ভোক্তা পর্যায়েও খরচ বাড়াতে চাইবে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুতে গড় উৎপাদন খরচ ছিল ২ টাকা ১৩ পয়সা। ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়ে হয় ৩ টাকা ১৬ পয়সা। ২০২২ সালে ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচ ৪ টাকা ২৪ পয়সা হতে পারে।
পিডিবি জানিয়েছে, পাইকারি দাম না বাড়লে ২০২২ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান হবে।
১৮ই মে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের শুনানি শুরু হয়।
শুনানি শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে রায় দেয়ার বাধ্যবাধকতা আছে।
গত ১০ বছরে পাইকারি বিদ্যুতে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ দাম বেড়েছে। এরআগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ভর্তুকি ধরে পাইকারি ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ আর খুচরা পর্যায়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়।