পায়রা পুরোপুরি বন্ধ

কয়লার অভাবে সোমবার বন্ধ হয়ে গেছে পটুয়াখালীর পায়রার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটটিও। এর ফলে বিদ্যুতের সরবরাহ আরও কমবে ছয় শতাধিক মেগাওয়াট।

গত ২৫ শে  মে বন্ধ হয় এই কেন্দ্রের আরও একটি ইউনিট।

বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এম এ খোরশেদ আলম এনার্জি বাংলাকে বলেন, কয়লার অভাবে কেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল। তবে আশঙ্কার কিছু নেই। নতুন করে দ্রুত সময়েই কয়লা আসবে। ৭ই জুন ইন্দোনেশিয়ায় জাহাজে কয়লা তোলা শুরু হবে বলে তিনি জানান।

প্রতিদিন এ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হত। কেন্দ্রটি পুরোদমে চালাতে প্রতিদিন ১২ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন।

এই কেন্দ্র থেকে গড়ে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছিল। কয়লা না থাকায় গত ২৫ শে  মে কেন্দ্রের একটি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়। এরপর ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বাকি ইউনিট থেকে দিনে ৩০০ থেকে ৬২০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছিল। এখন উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল।

তিন বছর আগে উৎপাদনে আসে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। তারপর এবারই প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল।

দেশব্যাপী বিদ্যুৎ সংকটের পরিমাণ বেডেছে। আগে যেসব এলাকায় দিনে এক ঘণ্টা করে দুইবার লোডশেডিং হত,  এখন সেখানে দিনের বেলায় তিন দফায় বিদ্যুৎ যাচ্ছে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি-পিজিসিবির তথ্য থেকে দেখা যায়, রোববার দুপুর ১২টায় লোডশেডিং ছিল ২২০০ মেগাওয়াট। সোমবার দুপুর ১২টায় লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬০০ মেগাওয়াট।

কবে চালু হবে

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আশা করি ২৫/২৬ তারিখের মধ্যে প্রথম চালান কয়লা চলে আসবে। এর পর আর সমস্যা হবে না। পর্যায়ক্রমে আসতে থাকবে।

তিনি বলেন, মে মাসের মধ্যবতী সময় থেকে দৈনিক ১০ মিলিয়ন ডলার করে ১০০ মিলিয়ন ডলার কয়লা সরবরাহকারীকে দিয়ে বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।

যে কারণে সংকট

বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীনের সরকারি প্রতিষ্ঠান সিএমসির মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালিত হত। পরে দুই প্রতিষ্ঠানের সমান মালিকানায় বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে আলাদা একটি কোম্পানি গঠিত হয়।

চুক্তি অনুযায়ি ছয় মাস বাকিতে কয়লা  দেয় সিএমসি। পরে আরও ৩ মাসের বকেয়াসহ মে মাস পর্যন্ত ৯ মাসে বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় অন্তত ৩৯ কোটি ডলার। ডলার সংকটের কারণে এই বকেয়া পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

ডলার সংকট মেটাতে কয়েক দফা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেও সমাধানে আসতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।