প্রকৌশলীদের গবেষণার জন্য আলাদা তহবিল গঠন করা হবে
রান্নার জ্বালানি নিশ্চিত করতে কচুরিপানা থেকে ধোয়া ছাড়া জ্বালানি তৈরি করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সামনে সমস্যা চিহ্নিত করে দেয়া হয়েছিল বায়োমাস এর চুলা প্রতিস্থাপন। আর এভাবেই তারা আবিষ্কার করে দেখিয়ে দিলো এর সমাধান।
এভাবে সাতটি সমস্যার সমাধান খূঁজে বের করলো বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এজন্য তারা সময় নিয়েছে ৩৬ ঘণ্টা। অর্থাৎ ৩৬ ঘণ্টার বিদ্যুৎ ও জ¦ালানির হ্যাকাথনে সাত সমস্যার সমাধান দিলো শিক্ষার্থীরা।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শেষ হলো টানা ৩৬ ঘণ্টার এই উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা। বৃহস্পতিবার সেরা উদ্ভাবনী দলকে দেয়া হলো পুরস্কার। একই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো ভবিষ্যতে উদ্ভাবনের পিছনে আলাদা তহবিল করে খরচ করার।
হ্যাকাথনের শুরুতে শিক্ষার্থীদেরকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সাতটি সমস্যা বলে দেয়া হয়। আর তারা এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করে।
আবাসিকে কার্যকর বিদ্যুৎ-জ্বালানি নিশ্চিত করা যায় কিভাবে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা বললেন সমন্বয়ের মাধ্যমে সমাধান করার। আর এই সমন্বয়ের জন্য তারা একটা ডিভাইস তৈরি করেছে। যা দিয়ে ঘরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসে প্রথমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। দ্বিতীয় সমস্যা ছিল সমুদ্রের পানির কার্যকর ব্যবহার। সমাধান এলো যে, সমুদ্রের পানিকে দুইভাগে ভাগ করা হবে, লবণাক্ত ও স্বাভাবিক। এই বিভক্ত করার গতি থেকেই উৎপাদন হবে বিদ্যুৎ। নগরীর ফুটপাতে ছাউনি করে তার উপরে সৌর প্যানেল বসিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ঘটানোর চিন্তা যুক্ত করলো বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
সাত বিভাগের প্রতিটিতে তিন দলকে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। মোট ২১টি পুরস্কার দেয়া হয়। প্রথম পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় তিনি বলেন, এই ধরনের উদ্ভাবনের জন্য আলাদা তহবিল গঠন করা হবে। ঢাকা ছাড়াও দেশের সাতটি বিভাগের এই উদ্ভাবনী মেলার আয়োজন করা হবে। তিনি বলেন, উদ্ভাবনী চিন্তুাগুলোকে বাণিজ্যিকীকরণে সরকার সহযোগিতা করবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর প্রযুক্তি নির্ভর আজকের এই তরুণ সমাজ। সুন্দর পরিবেশবান্ধব সোনার বাংলাদেশ হবে এ প্রজন্মের এই প্রতিশ্রুতিশীল তরুণদের হাত ধরেই। তারুণ্যের উদ্যমতায় দ্বীপ্ত হয়ে সকল সীমাবদ্ধতা মেধা, নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা ও কৌশল দিয়ে অতিক্রম করে সোনার বাংলা গড়তে সমন্বিত প্রয়াস চালানো হবে।
অনুষ্ঠানে জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্রর চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম শিকদার, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিওসার এসোশিয়েশনের সভাপতি লতিফ খান, সচিব আবদুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।
যে সাত সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজতে বলা হয়েছে তা হলো, আবাসিকে কার্যকর জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা, সমুদ্রের জ্বালানি কার্যকর করা, শিল্পেেত্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি শক্তির সংকট, বায়োমাস গ্যাস চুলা প্রতিস্থাপন, স্মার্ট গ্রিড টেকনোলজির বাস্তবায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুতের সুলভ সংযোগ নিশ্চিত করা। ৩৯০ দলের মধ্যে নির্বাচিত ১৫০ দল টানা ৩৬ ঘন্টা তাদের উদ্ভাবন গুলোর প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে দেশের তরুণ প্রকৌশলীরা।
সঞ্চিতা সীতু
শব্দ: ৪০৯