প্রচলিত বাতি বাধ্যতামূলক বন্ধ, ব্যবহার করতে হবে এলইডি

আগামী তিন বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সকল ইনকনডেনসেন্ট বাল্ব বা প্রচলিত বাতিবাধ্যতামূলক ব্যবহার বন্ধ করা হবে। এর পরিবর্তে ব্যবহার করা হবে এলইডি(লাইট ইমিটিং ডিওড) বাতি। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এই বাতি আর কেউ ব্যবহার বাআমদানি করতে পারবে না। আবাসিক বাণিজ্যিক সকল গ্রাহককের জন্য এই নিয়ম করাহয়েছে।
এদিকে এলইডি বাতির মান নিয়ন্ত্রণ এবং দাম কামানোর উদ্যোগ নেয়াহয়েছে। এজন্য দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএসটিআই এর মধ্যে অথবাঅন্য কোথাও এলইডি বাতি পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে। আমদানি কারকদেরকে মাননির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। সেই মান ছাড়া বাতি আমদানি করা যাবে না।
বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে নতুন গঠন করা টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নকর্তৃপক্ষ (স্রেডা) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্রেডা এই কর্মসূচি বাস্তবায়নকরবে। জ্বালানি ও অর্থ সাশ্রয় এবং পরিবেশ রক্ষায় এলইডি ব্যবহার বাড়ানোরউদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে স্রেডা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
স্রেডা চেয়ারম্যানতাপস কুমার রায় জানান, ইনক্যানডেনসেন্ট বাল্ব বাদ দিয়ে সারাদেশে এলইডিপ্রতিস্থাপন করা এখন সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার কাজ। সিএলএফ বাল্ব এর চেয়েএলইডিতে বেশি জ্বালানি সাশ্রয় হবে। বিশ্বব্যাপি এখন এই বাল্ব ব্যবহারবাড়ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কোটিবাল্ব জ্বালানো হয়। এরমধ্যে ৪০ ভাগ অর্থাৎ দুই কোটি প্রচলিত বাল্ব জ্বালানোহয়। বর্তমানে সন্ধ্যায় শুধু বাল্ব বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় এক হাজার ৭০০মেগাওয়াট। এলইডি বাতি ব্যবহার করলে এক হাজার ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ব্যবহারকমে যাবে।
বর্তমানে ২৩ ওয়াটের সিএফএল বাল্ব ১০০ ওয়াট ইনকনডেনসেন্টবাল্বের সমান আলো দেয়। এলইডি বাল্ব ব্যবহার করলে মাত্র ৯ ওয়াটে ঐ ১০০ওয়াটের সমান আলো দেবে। এলইডি জ্বলেও বেশি দিন। একটি এলইডি বাল্ব ১০ হাজারঘন্টা থেকে ১৫ হাজার ঘন্টা পর্যন্ত জ্বলে। বিশেষ ক্ষেত্রে ৩৫ থেকে ৫০ হাজারঘন্টাও জ্বলে। অন্যদিকে প্রচলিত বাল্ব এক হাজার থেকে দুই হাজার ঘন্টাজ্বলে।
স্রেডার সদস্য এবং বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব সিদ্দিক জোবায়েরবলেন, মানুষ কীভাবে কম দামে ভাল এলইডি বাল্ব পেতে পারে সেজন্য বিশেষ উদ্যোগনেয়া হয়েছে। বাল্বের মান এবং খরচ দুটোই নিয়ন্ত্রন করা হবে। এই জন্য স্রেডাথেকে দুটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ীসহ সকলের সাথে আলোচনা করে মান ও দাম নিয়ন্ত্রন করা হবে। আমদানি করাএবং দেশের মধ্যে তৈরী করা বাল্বের মান নিয়ন্ত্রণ করবে একটি কমিটি। অন্যকমিটি বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থায় কী মানের বাল্ব বাজারজাত করা উচিততা নির্ধারণ করবে। কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।
বর্তমানে মোট বাল্বের তিন ভাগেরও কম এলইডি ব্যবহার হচ্ছে। যারা সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে প্রধানত শুধু তারাই এই বাল্ব ব্যবহার করে। এর দামওঅনেক বেশি। একটি ৯ ওয়াটের এলইডি বাল্ব বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৩০০ টাকায়। এই দামঅর্ধেকে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
কয়েক বছর আগে সরকারি উদ্যোগেসিএফএল বাল্ব ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নেবিনামূল্যে সেই বাল্ব বিতরণ করা হয়েছিল। আধুনিক প্রযুক্তি এবং বেশিজ্বালানি সাশ্রয় হবে বলে এখন সরকার এলইডি’র প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলেবিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।