মেক্সিকো বিদেশীদের জন্য জ্বালানি খাত উন্মুক্ত করছে
১৯৩৮ সালের পর প্রথমবারের মতো বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য জ্বালানি খাত উন্মুক্ত করতে সাংবিধানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের চেষ্টা করছে মেক্সিকো। সোমবার এ-সংক্রান্ত ঐতিহাসিক বিলটি অনুমোদন করে দেশটির সিনেট, যা এখন নিম্নকক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায়। খবর রয়টার্স।
৮৫-২৬ ভোটে উচ্চকক্ষে অনুমোদিত বিলটি ছিল চারটি আইনের একটি প্যাকেজের শেষ ধাপ। এর মধ্য দিয়ে জ্বালানি অনুসন্ধান ও উত্তোলনে রাষ্ট্রায়ত্ত পিমেক্সের ৭৫ বছরের একচেটিয়া ব্যবসা অবসানের একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিলটিকে আইনে পরিণত করতে হলে নিম্নকক্ষ চেম্বার অব ডেপুটিজের অনুমোদন প্রয়োজন। বিরোধী বামপন্থীরা জ্বালানি খাত উদারীকরণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পূর্ববর্তী বিলগুলোতেও প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল তারা।
গত বৃহস্পতিবার উচ্চকক্ষে চতুর্থ বিলটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সোমবারের ফল শেষে প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিতো মেক্সিকোর আইনপ্রণেতাদের ‘রাজনৈতিক পরিপক্বতা’র প্রশংসা করেন।
ডিসেম্বরে অনুমোদিত প্রথম বিলটির বিরোধিতা করে বামপন্থী ডেমোক্রেটিক রেভলুশন ও লেবার দল বলেছিল, জ্বালানি খাত উদারীকরণের ফলে মেক্সিকোয় প্রাকৃতিক সম্পদের ঘাটতি দেখা দেবে, বিশেষ করে জ্বালানি তেল। প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় বিদেশীদের হস্তগত হবে মেক্সিকোর জাতীয় সম্পদ।
মেক্সিকোর রাজস্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জোগান দেয় জ্বালানি জায়ান্ট পিমেক্স। প্রস্তাবিত আইনে পিমেক্স ও ফেডারেল ইলেকট্রিক কমিশনের স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখে তাদের ‘উৎপাদনশীল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে পরিচালনার কথা বলা হয়েছে, যেখানে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানানো হবে। নতুন ব্যবস্থায় বেসরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালনেরও সুযোগ রাখা হবে।
প্রেসিডেন্ট নিতো শিক্ষা, সম্পত্তি, আর্থিক খাত ও টেলিকম শিল্প সংস্কার বাস্তবায়ন করে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি বলছেন, জ্বালানি সংস্কারের মাধ্যমে মেক্সিকোর তেল উত্তোলন অনেক বাড়বে, গত দশকে যা নাটকীয়ভাবে কমে গিয়েছিল। সরবরাহ বাড়লে জ্বালানি ব্যয় কমবে এবং তা মেক্সিকোর ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরো বাড়াবে।
প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ও কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্বের ম্যানুফ্যাকচারারদের কাছে একটি আকর্ষণীয় নাম হয়ে উঠেছে মেক্সিকো।