বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেশি, দাম কমছে না: প্রতিমন্ত্রী
বিক্রয় মূল্যের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় আপাতত বিদ্যুতের দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
একই কারণে প্রস্তাবিত অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ‘বাজেটারি সাপোর্ট’ চাওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার অধিবেশনের শুরতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করেন। আগের দিনই প্রায় নয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশে নতুন রেকর্ড হয়।
রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ফলে বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচ ৬ টাকা ২৭ পয়সা থেকে কমে ৫ টাকা ৬০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের বিক্রয় মূল্য অপেক্ষা উৎপাদন খরচ এখনও ৭০ পয়সা বেশি। যে কারণে আপাতত বিদ্যুতের দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।”
জেবুন্নেসা আফরোজের প্রশ্নে তিনি জানান, উৎপাদন খরচ বিক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় প্রস্তাবিত অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ‘বাজেটারি সাপোর্ট’ চাওয়া হয়েছে।
সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বছরে ১০ লাখ টন কয়লা উৎপাদন হচ্ছে। এর ৬০-৬৫ শতাংশ বড় পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই কেন্দ্রে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি ইউনিট স্থাপনের কাজ চলছে।
“এছাড়া দিঘীপাড়া কয়লাক্ষেত্র উন্নয়ন ও উৎপাদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই খনি থেকে বছরে ৩০ লাখ টন কয়লা উৎপাদন সম্ভব হবে এবং এই কয়লা দিয়ে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।”
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নে নসরুল হামিদ বলেন, “সরকার স্বল্প খরচে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য ২৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাইপলাইন তৈরির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পর্যায়ে রয়েছে। তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।”
গাজী ম ম আমজাদ হোসেনের প্রশ্নে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে সরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর আওতায় ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার এবং ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ১৯ হাজার সার্কিট কিলোমিটারে উন্নীত করা হবে।