বিদ্যুতের জ্বালানি তেল আমদানি হবে বেসরকারিভাবে
বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ফার্নেস তেল আমদানি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্ঠরা নিজেদের উদ্যোগেই তেল আমদানি করতে পারবে।
বর্তমানে বেসরকারি খাতের ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিপিসির অনুমোদন নিয়ে নিজ নিজ কেন্দ্রের জন্য ফার্নেস তেল আমদানি করে। সরকারি-বেসরকারি অন্যান্য তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ফার্নেস তেলসহ সব জ্বালানি তেল আমদানি করে বাংলাদেশ পেট্রেলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)।
সৌদি আরব, ইউএইসহ কয়েকটি দেশের ১৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করে বিপিসি এই তেল আমদানি করে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবিষয়ে বলেন, বেসরকারি খাতের ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকেরা তেল আমদানির অনুমতি চাইলে পর্যায়ক্রমে সবাইকে অনুমতি দেওয়া হবে।
বিপিসি সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ খাতে তেলের ব্যবহার বেড়েছে বলে গতকয়েক বছরে বিপিসি বিপুল অর্থ ব্যয় করে তেল মজুতের সামর্থ্য বাড়িয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে সময়মতো তেল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও তৈরি করেছে। এখন এই দায়িত্ব বেসরকারি খাতে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমতে থাকায় বর্তমানে বেসরকারি মালিকদের আমদানি করা তেল দিয়ে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ছে সাত থেকে আট টাকার মধ্যে। আর বিপিসির কাছ থেকে সরকার-নির্ধারিত দামে তেল নিয়ে যারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, তাদের বিদ্যুতের দাম পড়ছে ১৪ থেকে ১৬ টাকা।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই অসামঞ্জস্য দূর করতেই পর্যায়ক্রমে ফার্নেস তেল আমদানি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন বেসরকারি মালিকেরা আগ্রহী হলে আগামী বছরের জুলাই থেকে হয়তো বিপিসির ফার্নেস তেল আমদানি করতে হবে না। সেই লক্ষে চলতি মাসের শুরুতে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি চার লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস তেল আমদানির একটি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।
প্রতিবছর নভেম্বর মাসে বিপিসি পরবর্তী এক বছরের বিভিন্ন প্রকার জ্বালানি তেলের চাহিদা নিরূপণ করে। এরপর দুই দফায় (ডিসেম্বর ও জুলাইতে) মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নিয়ে তেল আমদানি করে। এবারও বিপিসি গত নভেম্বরে নিরূপিত বার্ষিক চাহিদা অনুযায়ী মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন চেয়েছে। কিন্তু গত ডিসেম্বরে আনা ফার্নেস তেল থেকে পিডিবি তাদের চাহিদার তুলনায় কম তেল নেয়ায় বিপিসির কিছু তেল এখনো মজুত রয়ে গেছে। এ কারণে মন্ত্রিসভা কমিটি বিপিসির প্রস্তাব অনুমোদন না করে মজুত থাকা তেলের সঙ্গে হিসাব সমন্বয় করে আমদানির নতুন প্রস্তাব দিতে বলেছে।