বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু

বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভবিষ্যত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থের যোগান দিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম কমার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমেছে। তবুও আগের হিসেবেই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে শুনানী করতে যাচ্ছে বিইআরসি।
বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ সকল পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে। আগামী ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের উপর গণশুনানী করবে। শুনানী শেষে বিদ্যুতের নতুন দাম নির্ধারণ করা হবে।
উত্তম সেবা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থা ও কোম্পানিগুলো।  সেবার মান আরও বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যে অর্থের প্রয়োজন তা এখনই গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে প্রত্যেক সরবরাহ কোম্পানি খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো প্রয়োজন বলে জানিয়েছে। বলা হচ্ছে, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ালে কেনা ও বেচার পার্থক্য বাড়বে। সেজন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। যদিও বিশ্ববাজারে তেলের দাম এখন কম। সেজন্য বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়েনি। বরং কমেছে। তবুও পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ২২ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। এছাড়া ডিপিডিসি ১৭ দশমিক ৮৫, আরইবি ২৫ দশমিক ৮৯, ডেসকো ১৭ দশমিক ৪৫ এবং ওজোপাডিকো ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ এবং সঞ্চালনে ৭০ দশমিক ৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। পাইকারি ও সঞ্চালনের দাম সরবরাহকারি কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য হবে।
এবারও অল্প বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকছে। ৩০ ইউনিটের কম ব্যবহারকীদের কোন কোন কোম্পানি দাম বাড়ানোরই প্রস্তাব করেনি। বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর দামও বেশি রেখে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।  পিডিবি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে বলেছে, আগের চেয়ে গ্রাহকদের খরচ বাড়বে। কিন্তু এরপরে নির্ভরযোগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে । শিল্প ও বানিজ্যিক গ্রাহকের তুলনায় আবাসিক গ্রাহকের কম হারে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
বিইআরসি সূত্র জানায়, ২০ জানুয়ারি প্রথমদিন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর শুনানী হবে। ২১ জানুয়ারি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর সঞ্চালন দামের উপর শুনানী। এরপর পর্যায়ক্রমে খুচরা গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর শুনানী হবে। ২১ জানুয়ারি ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন (ওজোপাডিকো), ২২ জানুয়ারি পিডিবি ও  ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) শুনানী হবে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়ে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মতামত থাকলে তা আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে বিইআরসি কার্যালয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
বিইআরসি একজন সদস্য জানান, শুনানীর পর সুক্ষ বিচার বিশ্লেষণ করে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হবে। যে প্রস্তাব পাওয়া গেছে সে অনুযায়ি নতুন দাম নির্ধারণ হবে না।