বিদ্যুৎ জ্বালানির বিশেষ আইন: বিরোধিতার মধ্যেই মেয়াদ বাড়ানোর বিল পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘বিদ্যুৎ ও জ্বলানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে। পাঁচ বছরের জন্য এই আইনের মেয়াদ বাড়ল।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে এই বিল পাস হয়।
এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনীর প্রস্তাবগুলোর ওপর আলোচনা শেষে স্পিকার তা নিষ্পত্তি করেন।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা এর বিরোধিতা করে বলেন, ‘জনগণের করের টাকা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য এই আইন করা হচ্ছে।’
জবাবে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিলটি নতুন করে আনা হয়নি। সময় বাড়ানো হয়েছে। নিরবচ্ছন্ন বিদ্যুৎ যাতে দিতে পারি সেজন্য এই আইন। ছয় মাসের মধ্যে যাতে কাজ করতে পারি সেজন্য এই আইন। শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি। এখন নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চাই। সঞ্চালন লাইন করতে গেলে সময় লাগবে। এটা কুইক রেন্টালের জন্য না। দ্রুত সরবরাহের জন্য এই আইন। দ্রুত সঞ্চালন করতে হবে। মাটির নিচে যেতে হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে ঢাকার সব ঝুলন্ত তার মাটির নিচে যাবে, সিলেট যাবে, খুলনা যাবে।
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, শতভাগ বিদ্যুতের কথা বলছি। রূপপুর, মাতারবাড়িতে বড় প্রকল্প করছি। ঋণের বোঝা বাড়ছে। এভাবে চললে দেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে। এই আইন করে অনিয়ম-দুর্নীতির বৈধতা দেয়া হচ্ছে। বিশেষ বিধান রাষ্ট্রের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে। কিন্তু তা কেন ১৬ বছর চলবে। সর্বোচ্চ এই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করেন। এছাড়া ঘোর আপত্তি থাকবে।
গণ ফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, এই আইন একটি জঘন্য কালো আইন। এখানে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। তড়িঘড়ি করে করা হচ্ছে। জনগণের টাকা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য এই আইন করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আইনের এক্সটেনশন দরকার নেই। ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। অর্ধেক ব্যবহার হয়। সঞ্চালন লাইন নেই। পায়রার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কিনতে পারছেন না সঞ্চালন লাইন নেই বলে। প্রকল্প বসে আছে। ক্যাপাসিটি চার্জ কত দিয়েছেন? চৈত্র, বৈশাখ, ভাদ্র মাসে মানুষ ঘুমাতে পারে না। এলাকায় ৪-৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। জোরে বৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ যায়। বাতাস হলে বিদ্যুৎ যায়।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, অল্প জনবল দিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে। একটা লাইন দিয়ে ৬০-৭০ কিলোমিটার লাইন চালাচ্ছেন।
বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, মন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি আছে। এই আইনে কিছু মানুষের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জনগণের টাকা কিছু মানুষের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হবে কিন্তু তা নিয়ে কথা বলা যাবে না। বড় বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পরিকল্পিতভাবে অচল করা করে রাখা হচ্ছে।
পীর ফজলুর রহমান বলেন, কুইক রেন্টাল ব্যয়বহুল। কেন এটা করা হচ্ছে। সঞ্চালন লাইনে কেন নজর দেওয়া হচ্ছে না।