বিদ্যুৎ ব্যবহারে আবার সৌর প্যানেলের খড়গ
বিদ্যুৎ ব্যবহারে নতুন করে সৌর প্যানেলের খড়গ চাপানো হয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। নতুন করে এসি চালাতে সৌর প্যানেল লাগাতে হবে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
পরিপত্রে এয়ারকুলার লাগানোর নিষেধাজ্ঞা শর্ত সাপেক্ষে তুলে নেয়া হলেও এসি লাগাতে সৌর প্যানেল বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এতদিন বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেয়া হলেও এসি ব্যবহারে বাধ্যবাধকতা ছিল। এসি ব্যবহারে অনুমোতি দেয়া হত না। পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ পরিস্থিতি ভাল হওয়াতে শর্তসাপেক্ষে এয়ারকুলার বরাদ্দের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হল।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, আবাসিক গ্রাহকদের দুই কিলোওয়াট (দুই হাজার ওয়াট) এর বেশি লোড থাকা গ্রাহকদের এসি ব্যবহার করতে হলে মোট চাহিদার তিন শতাংশ সৌর প্যানেল লাগাতে হবে। শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য সৌর প্যানেল ব্যবহারে বিভিন্ন পর্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে। যে সব শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকের ৫০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের লোড অনুমোদন করা আছে তাদের শুধু লাইট ও ফ্যানের সাত ভাগ সৌর প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ নিতে হবে। আর ৫০ কিলোওয়াটের বেশি হলে লাইট ও ফ্যানের ১০ শতাংশ সৌর প্যানেল বসাতে হবে। তবে পোশাক শিল্পের জন্য লাইট ও ফ্যানের পাঁচ ভাগ সৌর প্যানেল বসালে চলবে। বিতরণ কোম্পানি বা সংস্থার প্রধানরাই শুধু এই বরাদ্দ অনুমোদন করতে পারবে। অর্থাৎ কারও এসি ব্যবহার করতে হলে সংস্থা বা কোম্পানির প্রধান পর্যন্ত আসতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নজরুল হাসান (অব) বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের এই পরিপত্র পাওয়া গেছে। সরকারি এই আদেশ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
২০১০ সালের নভেম্বর মাসে দুই কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মোট চাহিদার তিন শতাংশ সৌর থেকে করার অনুরোধ করা হবে বলে প্রজ্ঞাপন করা হয়। সেই অনুরোধ পরবর্তীকালে মৌখিকভাবে বাধ্যবাধকতায় রূপ নেয়। সরবরাহ কোম্পানিগুলো মৌখিকভাবে সৌর প্যানেল স্থাপন বাধ্য করে ফেলে। সৌর প্যানেল ছাড়া নতুন সংযোগ দেয়া হত না। এমন কি ‘অনুরোধের’ কথা থাকলেও সৌর প্যানেল না থাকার কারণে গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরে গতবছর এই বাধ্যবাধকতা পুরো তুলে নেয়া হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে আর সৌর প্যানেল লাগবে না বলে জানানো হয়। সৌর প্যানেল অবকাঠামোগতভাবে যথাযথ হবে না বলে বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হয়। নতুন করে সৌর প্যানেলের পরিবর্তে সৌর তহবিল করার কথা বলা হয়েছিল। গ্রাহককের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট অর্থ জমা নেয়া হবে। তহবিলে সেই অর্থ জমা দিয়ে গ্রামে যেখানে গ্রিড লাইন নেই সেখানে সৌর প্যানেল বসানো হবে। এসবের মধ্যে নতুন করে শর্ত সাপেক্ষে সৌর প্যানেল বাধ্য করা হল।
সংশ্লিষ্টরা জানয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও নতুন করে যে সৌর প্যানেল বসানোর আদেশ জারি করা হয়েছে তাতে ঝামেলা আরও বাড়বে। গ্রহকের হয়রানি কমবে না। বছর না ঘুরতেই সরকারের নীতি নির্ধারন পর্যায়ে সিদ্ধান্ত বদল গ্রহককে হয়রানিতে ফেলবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগের বিপরীতে যে সৌর প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে তা থেকে ৫৩২ দশমিক ১৬৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।