বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে সৌর প্যানেলে কড়াকড়ি

বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন কিন্তু সৌর প্যানেল স্থাপন করেননি – এমন গ্রাহকদেরও সৌর প্যানেল বসাতে হবে। সৌর প্যানেল ছাড়া আর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে না। সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিভাগের আদেশ বাস্তবায়ন শুরু করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
দুই কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারিদের সৌর প্যানেল আছে কি নেই তা তদারকির জন্য বিভিন্ন এলাকায় ছয়টি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিপিডিসি। বুধবার ডিপিডিসি প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা গেছে। অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোও পর্যায়ক্রমে এই কার্যক্রম শুরু করবে।
ডিপিডিসিতে অনুষ্ঠিত বৈঠক সূত্র জানায়, যারা সৌর ছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছে তাদের আগামী দুই মাসের মধ্যে চিঠি দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সকলকে সৌর প্যানেল স্থাপনের আওতায় আনা হবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে বলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। তবে নতুন করে এসিসহ দুই কিলোওয়াটের বেশি যে কোন সংযোগ পেতে সৌর প্যানেল লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গতমাসে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করে। পরিপত্রে এয়ারকুলার লাগানোর নিষেধাজ্ঞা শর্ত সাপেক্ষে তুলে নেয়া হলেও এসি লাগাতে সৌর প্যানেল বসানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আবাসিক গ্রাহকদের দুই কিলোওয়াট (দুই হাজার ওয়াট) এর বেশি লোড  থাকা গ্রাহকদের এসি ব্যবহার করতে হলে মোট চাহিদার তিন শতাংশ সৌর প্যানেল লাগাতে হবে। যে সব শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকের ৫০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের লোড অনুমোদন করা আছে তাদের শুধু লাইট ও ফ্যানের সাত ভাগ সৌর প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ নিতে হবে। আর ৫০ কিলোওয়াটের বেশি হলে লাইট ও ফ্যানের ১০ শতাংশ সৌর প্যানেল বসাতে হবে। তবে পোশাক শিল্পের জন্য লাইট ও ফ্যানের পাঁচ ভাগ সৌর প্যানেল বসালে চলবে। বিতরণ কোম্পানি বা সংস্থার প্রধানরাই শুধু এই বরাদ্দ অনুমোদন করতে পারবে। অর্থাৎ কারও এসি ব্যবহার করতে হলে সংস্থা বা কোম্পানির প্রধান পর্যন্ত আসতে হবে।
২০১০ সালের নভেম্বর মাসে দুই কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মোট চাহিদার তিন শতাংশ সৌর থেকে করার অনুরোধ করা হবে বলে প্রজ্ঞাপন করা হয়। সেই অনুরোধ পরবর্তীকালে মৌখিকভাবে বাধ্যবাধকতায় রূপ নেয়। সরবরাহ কোম্পানিগুলো মৌখিকভাবে সৌর প্যানেল স্থাপন বাধ্য করে ফেলে। সৌর প্যানেল ছাড়া নতুন সংযোগ দেয়া হত না। এমন কি ‘অনুরোধের’ কথা থাকলেও সৌর প্যানেল না থাকার কারণে  গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরে গতবছর এই বাধ্যবাধকতা পুরো তুলে নেয়া হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে আর সৌর প্যানেল লাগবে না বলে জানানো হয়। সৌর প্যানেল অবকাঠামোগতভাবে যথাযথ হবে না বলে বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হয়। নতুন করে সৌর প্যানেলের পরিবর্তে সৌর তহবিল করার কথা বলা হয়েছিল। গ্রাহককের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট অর্থ জমা নেয়া হবে। তহবিলে সেই অর্থ জমা দিয়ে গ্রামে যেখানে গ্রিড লাইন নেই সেখানে সৌর প্যানেল বসানো হবে। তবে এসব করা হয়নি। বরং সৌর প্যানেল নতুন করে বাধ্য করা হল।